তেল কোম্পানির ‘ভয়াবহ লোভ’: সমালোচনায় গুতেরেস

বিশ্ব যখন নানা সংকটের মুখোমুখি, তখন রেকর্ড মুনাফা করছে জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলো। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অনৈতিক লোভের এই মানসিকতার তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস। খবর দ্য হিন্দু।

অ্যান্তেনিও গুতেরেস

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বের শক্তি সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে। বৈশ্বিক এই সংকটের সময় এটি পুরোপুরি অনৈতিক। তিনি সব দেশের সরকারকে অত্যধিক এই লাভের ওপর শুল্ক বসানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এই কঠিন সময়ে সবচেয়ে দুর্বল লোকদের সহযোগিতা করার জন্য এই তহবিল ব্যবহার করুন।

গুতেরেস জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পের সাথে জড়িতদের অত্যধিক মুনাফার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, এই ভয়ঙ্কর লোভ দরিদ্রতম ও সবচেয়ে দুর্বল মানুষদের শাস্তি দিচ্ছে, বিশ্বকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

বিশ্বের তেল কোম্পানিগুলো এ সংকটে বড় অংকের মুনাফা করছে

করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাবের ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের এক সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে জাতিসংঘের মহাসচিব এসব কথা বলেন। খাদ্য, জ্বালানি, ও অর্থের সংকট মোকাবেলায় সমাধান বের করার জন্য এই গ্রুপটি গঠন করা হয়েছে। গ্রুপটি এরইমধ্যে খাদ্য ও অর্থ সংক্রান্ত কিছু সুপারিশ পেশ করেছে।

গতকাল বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে গুতেরেস বলেন, খাদ্য ও অর্থ সংকট মোকাবেলায় সামান্য কিছু অগ্রগতি অর্জন করা গেছে। তবে এক্ষেত্রে ন্যূনতম যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, জ্বালানি সংকটের ক্ষেত্রেও অনুরূপ সফলতা পেতে হবে।

প্রতিবেদনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশে গ্রুপটি শক্তি সংরক্ষণ, গণপরিবহনের প্রসার এবং এগুলোর প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের ক্ষেত্রে ধনী ও উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সবুজ শক্তির রূপান্তরের জন্য ব্যক্তিগত ও বহুপাক্ষিক অর্থায়ন বাড়ানোরও সুপারিশ করা হয়েছে।

গুতেরেস বলেন, ব্যাটারির স্টোরেজসহ নতুন প্রযুক্তি সর্বজনীন হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সরকারগুলোকে অবশ্যই কাঁচামাল ও পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি প্রযুক্তির জন্য সরবরাহের চেইন বাড়াতে হবে এবং এক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে হবে।

এ সময় তিনি কঠোর ভাষায় বলেন, বর্তমান সময়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশ এই সংকটে যুক্ত হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে অন্যরা কী করছে সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ভন্ডামির কোনো স্থান নেই।

এ সময় তিনি কয়লা প্ল্যান্ট আবারো চালু করায় কিছু উন্নত দেশের সমালোচনা করেন।