চাপ সৃষ্টি করে ইরানকে বাগে আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) বা ইরানের পরমাণু চুক্তি পুনর্বহাল করার প্রচেষ্টা বারবার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। চুক্তিটি কার্যকরে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও আমেরিকান ও ইরানের কূটনীতিকরা অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় মিলিত হন। মূলত নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে ইরানকে বাগে আনতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ইরানের পতাকা

মধ্যস্থতাকারী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্য, চুক্তি পুনর্বহাল করে আমরা একটি খারাপ পরিস্থিতি থেকে বিশ্বেবাসীকে রক্ষা করতে চাই।

বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, ইরানকে জোর করে চুক্তিতে আনতে চাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারা ইরানের ওপর ব্যাপক চাপ ফেলছে। চলতি সপ্তাহে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল রপ্তানিকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরানও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে উন্নত সেন্ট্রিফিউজে হেক্সাফ্লোরাইড গ্যাস প্রবেশ করানো শুরু করেছে।

ইইউ শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল

দুই পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া কূটনীতিকরা উদ্বিগ্ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল ইঙ্গিত করেছেন, যেসব ভোটার ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের পক্ষে তারাই সমর্থন দেবে। তবে বাইডেন গত মাসে বলেছিলেন, আমরাও একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।

২০২১ সালের এপ্রিলে ইরানের সাথে সংলাপ পুনরায় শুরু হয়। তবে ইরানের বিরুদ্ধে বাইডেন তার পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি বজায় রেখেছেন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপীয় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো ইরানের সাথে ব্যবসা করতে নিরুৎসাহিত বোধ করছে।

বিশ্বব্যাপী অর্থ ও বাণিজ্যে ওয়াশিংটনের যথেষ্ট প্রভাবের কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রচেষ্টা কাজ করেনি। ইরানও চায় আমেরিকা তার রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলুক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এটিকে কঠিন প্রস্তাব হিসেবে বিবেচনা করছে। কারণ আমেরিকা মনে করে, সিরিয়া এবং অন্যত্র প্রক্সি যুদ্ধের জন্য বাহিনীটি দায়ী।

তা সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুই পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনার জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে। সর্বশেষ বৈঠকটি ইইউ শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলাফল। ফিনান্সিয়াল টাইমসের সাম্প্রতিক মতামতে তিনি লিখেছেন, চুক্তিটি পুনর্বহাল সম্ভব না হলে আমরা একটি বিপজ্জনক পারমাণবিক সংকটের ঝুঁকিতে পড়ে যাব। চুক্তিটি শেষ করা আমাদের যৌথ দায়িত্ব।