‘সুন্দর’ বাড়িতে এফবিআইয়ের অভিযান, ক্ষেপেছেন ট্রাম্প

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একটি বড় দল বিনা নোটিশে ফ্লোরিডায় তার মালিকানাধীন মার-এ-লাগো এস্টেটে তল্লাশি চালিয়েছে। ট্রাম্প এ অভিযানের নিন্দা জানিয়ে বলেন, তৃতীয় বিশ্বেই কেবল এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। খবর সিএনএন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ফ্লোরিডার বাড়ি

গতকাল সোমবার সেভ আমেরিকা প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ফ্লোরিডার পাম বিচে আমার সুন্দর বাড়িটিতে এফবিআই এজেন্টের বড় একটি দল অভিযান চালাচ্ছে। তিনি বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় বা অনুপযুক্ত বলে অভিহিত করেন।

শুধুমাত্র তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতেই এমন ঘটতে পারে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি দুর্নীতিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যে স্তরের দুর্নীতি আগে দেখা যায়নি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফাইল ছবি

তিনি দাবি করেন, তদন্তকারী দল আমার সেফ হোমেও ঢুকে পড়েছে। এর আগে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে এমন কিছু ঘটেনি।

তদন্তের সাথে থাকা দুই কর্মকর্তাকে উদ্বৃত্ত করে সিএনএন রিপোর্টার নাতাশা বার্ট্রান্ড এক টুইটে লেখেন, ট্রাম্পের সাথে মার-এ-লাগোতে নিয়ে আসা জিনিসপত্রই অভিযানকারীদের মূল লক্ষ্য বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন আইন অনুসারে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সম্পর্কিত সমস্ত যোগাযোগ সংরক্ষণ করতে হবে। ট্রাম্পের ব্যবসা ও ইউএস ক্যাপিটলে ৬ জানুয়ারির হামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে একাধিক তদন্তের কাজে তারা এগুলো সংগ্রহ করতে চাইছে।

হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সঙ্গে ১৫টি স্যুটকেস বোঝাই দাপ্তরিক গোপনীয় নথিপত্র নিয়ে গেছেন বলে ডেমোক্র্যাটরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে। এসব নথিপত্র পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে সাবেক প্রেসিডেন্টের রিসর্ট হাউসে অভিযান চালানো হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ডেমোক্র্যাটরাই এ অভিযানের নেপথ্যে রয়েছে, যারা চায় না ট্রাম্প কোনোভাবেই ২০২৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় অংশ নিক।

গত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছেড়ে ফ্লোরিডা রাজ্যের পাম বিচে অবস্থিত মার-আ-লাগো রিসোর্টকে স্থায়ী আবাস হিসেবে ব্যবহার করছেন। সমুদ্রঘেঁষা এই বাড়িটি ট্রাম্পের খুব প্রিয়। ক্ষমতায় থাকাবস্থায়ও এই ভবনে অনেক সময় কাটিয়েছেন তিনি। শীতকালের প্রায় পুরোটা সময় ফ্লোরিডার এই বাড়িতে কাটানোর জন্য এর নামই হয়ে গিয়েছিল ‘শীতকালীন হোয়াইট হাউস’।

১৯২৭ সালে ফ্লোরিডার বিখ্যাত পোস্ট পরিবারের উত্তরসূরি মারজোরি মেরিওয়েদার পোস্ট ২০ একর জমির ওপর রাজকীয় এই স্থাপনা তৈরি করেছিলেন। ১৯৮৫ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ১ কোটি ডলারে এটি কিনে নেন। এক সময় এটিকে ক্লাবেও রূপান্তর করা হয়েছিল।

ফ্লোরিডা রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভবন হিসেবে স্বীকৃত মার-আ-লাগোতে ১২৮ টি কক্ষ ছাড়াও রয়েছে ২০ হাজার বর্গফুটের একটি নাচঘর, ৫টি টেনিস কোর্ট এবং বড় আকারের একটি সুইমিং পুল। বাড়িটি থেকে সরাসরি আটলান্টিক মহাসাগরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাগাজিন ফোর্বস জানিয়েছে, বর্তমানে বাড়িটির আর্থিক মূল্য প্রায় ১৬ কোটি ডলার।