রুশ রকেটে চেপে মহাকাশে ইরানি স্যাটেলাইট

নিজস্ব প্রযুক্তিতে নিজেদের জনবল নিয়ে তৈরি বেসামরিক স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে ইরান। এগারো দশকের কবি ওমর খৈয়মের নামে নামকরণকৃত এ স্যাটেলাইট কক্ষপথে নিয়ে যেতে ইরানকে সহযোগিতা করেছে রাশিয়া। আজ সকালে কাজাখস্তানের বাইকোনুরে অবস্থিত রাশিয়ার মহাকাশ ঘাঁটি থেকে খৈয়মকে নিয়ে উড়াল দেয় রাশিয়ায় তৈরি একটি সয়ুজ রকেট। 

ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তি ও জনবলে তৈরি স্যাটেলাইট খৈয়ম আজ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে

খৈয়মের উৎক্ষেপণকে ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে মহাকাশ নিয়ে কৌশলগত সহযোগিতার সূচনা বলে অভিহিত করেছেন তেহরানের কর্মকর্তারা। ইরানের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ইসা জারিপুর বলেছেন, আমরা মহাকাশ প্রযুক্তি স্বকীয়করণ সম্পন্ন করা পর্যন্ত এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

আজ মস্কো সময় সকাল ৯ টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ১২টা) একটি সয়ুজ টু পয়েন্ট ওয়ান বি রকেট খৈয়ম স্যাটেলাইট নিয়ে মহাকাশে যাত্রা করে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০০ কিলোমিটার উপরে একটি কক্ষপথে এ স্যাটেলাইট স্থাপন করা হবে। দিনে চারবার হাই-রেজোলুশন ইমেজ পাঠাবে খৈয়ম।

ইরানের মহাকাশ সংস্থার (আইএসএ) মাহদাশত ঘাঁটিতে এরইমধ্যে টেলিমেট্রি ডেটা পাঠিয়েছে খৈয়ম স্যাটেলাইট। এ টেলিমেট্রি ডেটা স্যাটেলাইটের সাবসিস্টেমগুলোর অবস্থা জানান দেয়। আইএসএ কর্মকর্তা সাইদ সিদ্দিকিয়ান বলেন, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এ পর্যন্ত সফল হয়েছে। আমরা এখন সংকেত পাবার অপেক্ষা করছি।

ইরান বলেছে, খৈয়ম স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি ইরানের সীমান্ত অঞ্চলে নজরদারি এবং কৃষি, প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যবহৃত হবে।

এর আগে পশ্চিমা প্রচারমাধ্যমে বলা হয়েছিল, খৈয়ম স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রণ আপাতত রাশিয়ার হাতে থাকবে এবং রাশিয়া এটিকে ইউক্রেনে নজরদারির কাজে ব্যবহার করবে।

এসব আশঙ্কা নাকচ করে আইএসএ বলেছে, উৎক্ষেপণের দিন থেকে ইরানি বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদরা খৈয়ম স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণ করবে। অন্য কোনো দেশ এ স্যাটেলাইটের তথ্য পাবে না। কেননা আইএসএর গবেষকরাই এ স্যাটেলাইটের অ্যালগরিদম এনক্রিপ্ট করেছেন। অন্য কোনো দেশের সামরিক প্রয়োজনে খৈয়মকে ব্যবহার করা হবে বলে যেসব গুজব ছড়িয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

মহাকাশ প্রযুক্তির পাশাপাশি ডিজিটাল সেবা, যোগাযোগ, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও টেলিকমিউনিকেশন খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে কাজ করছে রাশিয়া ও ইরান। গত মে মাসে সেন্ট পিটার্সবার্গ পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটিতে উদ্বোধন হয়েছে ইরান-রাশিয়া জয়েন্ট টেকনোলজি সেন্টার।

এর আগে মার্চ মাসে ইরানের বিমান বাহিনী তাদের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নূর-২ লো আর্থ অরবিটাল (এলইও) অঞ্চলে পাঠায়। ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় দাশত-এ-কবীর থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।