কলকাতার গড়িয়াহাট থেকে রাসবিহারীর দিকে তীব্র গতিতে এগিয়ে চলছিল গাড়িটি। ভেতরে চালকের আসনে ছিলেন ভারতের জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায় আর তাঁর পাশে ছিলেন মডেল সনিকা সিংহ চৌহান। হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতে উঠে যায় গাড়িটি। ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে উদ্ধার হন আহত বিক্রম ও সনিকা। বিক্রম বেঁচে গেলেও মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান সনিকা।
বিক্রম ও সনিকা যে গাড়িতে ছিলেন, সেটাতে অন্তত পাঁচটি এয়ারব্যাগ ছিলো। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা কাজ করেনি।
গত শনিবার ভোররাতের এই দুর্ঘটনার পর থেকে মেরুদণ্ড ও ঘাড়ে চোট পেয়ে হাসপাতালে অচেতন পড়েছিলেন বিক্রম। জ্ঞান ফিরতেই তাঁর প্রথম জিজ্ঞাসা 'সনিকা কেমন আছে?' ডাক্তারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাকে সনিকার মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি।
আজ সোমবার বিক্রমের পরিবারের এক সদস্য জানান, চোখ খুলেই বিক্রম প্রথমে জানতে চেয়েছেন সনিকা কি এই হাসপাতালেই রয়েছেন কিনা। কিন্তু দুর্ঘটনার আতঙ্ক কাটিয়ে না ওঠা পর্যন্ত সনিকার মৃত্যুর কথা বিক্রমকে জানানো ঠিক হবে না বলে পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার।
লালবাজার থানার পুলিশ জানায়, বিক্রমের সঙ্গে কথা বলার আগ পর্যন্ত দুর্ঘটনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে না। তবে বিক্রম জানিয়েছেন যে গাড়ির গতি বেপরোয়া ছিল না।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই জানিয়েছে, গাড়ির দরজা খুলে সনিকা ও বিক্রমকে বাইরে আনা হয়েছিল। কিন্তু বিক্রমের পরিবার প্রশ্ন তুলেছেন, গাড়িটিতে পাঁচটি এয়ার ব্যাগ থাকা সত্ত্বেও কেন একটিও খোলেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এয়ার ব্যাগ খোলার কিছু শর্ত রয়েছে। সিটবেল্ট বাঁধা আছে কিনা বা কীভাবে গাড়িটি ধাক্কা লাগছে, তার ওপর এয়ার ব্যাগের কার্যকরিতা নির্ভর করে।
বিক্রমের বাবা বলেন, 'ছেলে একটু সুস্থ হলেই প্রথমে গাড়িসংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করবো। এয়ার ব্যাগ যদি কাজ করতো তবে হয়তো আজ এইদিন দেখতে হতো না। মেয়েটাও প্রাণে বেঁচে যেত।'