মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ শরণার্থীদের ভরণ পোষণে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের প্রতিমাসে সাড়ে চারশ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছেন, শরণার্থীদের তারা সেদেশে ঢুকতে দেবেন না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, 'বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়। কিন্তু আমরা ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারলে বাড়তি পাঁচ সাত লাখ মানুষকেও খাওয়াতে পারবো।'
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই শরণার্থী নিয়ে তাদের মনোভাব ব্যক্ত করেছে। তাদের কাছে আমরা কী আশা করতে পারি? বিশেষ করে দেশটির প্রেসিডেন্টই যখন এমন মনোভাব প্রকাশ করেন তবে কেনই বা আমরা তাদের কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতবো?'
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে গতকাল ট্রাম্পের আয়োজনে জাতিসংঘের সংস্কার বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাস্থল ছাড়ার পর ট্রাম্পকে তিনি কয়েক মিনিটের জন্য থামান। শেখ হাসিনা রয়টার্সকে জানান, এ সময় ট্রাম্প তার কাছে বাংলাদেশের খবর জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ খুব ভালো অবস্থায় আছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীরা। কিন্তু শরণার্থী প্রসঙ্গে ট্রাম্প কোন মন্তব্যই করেননি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়টার্সকে বলেন, 'শরণার্থী সমস্যা সমাধানে ট্রাম্পের কাছ থেকে আমরা কিছু আশা করতে পারি না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের কাছে স্পষ্ট করেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ রোহিঙ্গা সংকটে এগিয়ে না আসলেও আমরা পিছু পা হবো না। আমাদের দেশের দেয়ার মতো অনেক নেই, কিন্তু তবুও সমস্যার সমাধান না আসা পর্যন্ত আমরা রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবো।'
উল্লেখ্য, মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলমানদের অবৈধ অভিবাসী মনে করে। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশের কমপক্ষে ৩০টি তল্লাশি চৌকি ও সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হামলায় চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মিয়ানমার। এই হামলায় ১২ জন পুলিশ নিহত হন। এরপরই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও রাখাইনের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে প্রাণ ভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে।