আপনি পড়ছেন

মিয়ানমারে যখনই নির্যাতন হয়েছে তখনই রোহিঙ্গা মুসলিমরা জীবন বাঁচাতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। যুগ যুগ ধরে দেশ ছাড়তে ছাড়তে তারা আজ মিয়ানমার থেকে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। প্রথম বড় কোন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৭৭ সাল। সে সময় ভয়াবহ সামরিক অভিযানের মুখে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম মায়ানমার ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। 

rohingya fleeing from maymanmar

ভৌগলিকভাবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সবচেয়ে নিকটবর্তী প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ হওয়ায় তারা প্রথমেই চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের সীমান্তে কড়া পাহারা এবং কোস্টগার্ডের তৎপরতার ফলে তারা অনান্য দেশেও আশ্রয় খুঁজেছেন। চেষ্টা করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর চোখে ফাঁকি দিয়ে কোন ভূখণ্ডে আশ্রয় নেয়ার।

কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম কোনো দেশই রোহিঙ্গাদের জন্য কোন আশ্রয়ের সুযোগ দেয়নি। তারপরেও রোহিঙ্গারা ঢুকে পড়ায় মানবিক কারণে অনেক দেশেই তাদের আশ্রয় দিয়েছে। এই মানবিকতায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ। চলতি বছরে যখন রোহিঙ্গা সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করে তখন বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয়। এরপর মালয়েশিয়াও ঘোষণা দেয় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার।

আর অবৈধভাবে এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোন দেশে কত সংখ্যক রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে তার একটি হিসাব প্রকাশ করেছে কাতার ভিত্তক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরা। ইনফ্রোগ্রাফিক্সের মাধ্যমে তারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় অবস্থান প্রকাশ করে আসছে।

সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর আল-জাজিরা তাদের ইনফ্রোগ্রাফিক্সটি আপডেট করেছে। সেখানে প্রদত্ত তথ্য অনুয়ায়ী সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। দেশটিতে মোট তিন লাখ ৫০হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে।

rohinga infograp al jajira

তৃতীয় সৌদি আরব, তারা আশ্রয় দিয়েছে দুই লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে। আর চতুর্থ নম্বরে আছে মালয়েশিয়া। দেশটি এক লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এ ছাড়া ভারত ৪০ হাজার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ১০ হাজার, থাইল্যান্ড ৫ হাজার এবং ইন্দোনেশিয়া ১ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে মিয়ানমারের উগ্র বৌদ্ধরা এবং একই মদদপুষ্ট সেনারা রোহিঙ্গাদের উপর ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। তারা এমনভাবে নির্যাতন করছে যাতে সব রোহিঙ্গা মিয়ানমার ছেড়ে অন্য দেশে পালিয়ে যায়। অন্য দেশগুলো রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর মনোভাব এমন দাঁড়িয়েছে যে, যাতে এই সুযোগে সব রোহিঙ্গাকে ওই সব দেশে পাঠিয়ে দিয়ে তাদের দখলে থাকা ভূমি সরকার দখলে নিতে পারে।

উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব থাকার কারণে এই সংকট দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। অন্য দিকে ভারত এই ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনায় মিয়ানমারের পাশে থাকার মতো বিতর্কিত অবস্থান নিয়েছে এবং নিজ দেশে থাকা ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে বের করে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ এবং ধনী দেশের তুলনায় জনসংখ্যার ভারে আক্রান্ত বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি অধিক মানবিক আচরণ দেখিয়ে চলেছে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.