আপনি পড়ছেন

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ১৩৫টি দেশ বাংলাদেশের পক্ষে মিয়ানমার ইস্যুতে ভোট দিলেও ভারত নীরব ভূমিকা পালন করেছে।

united national council

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৭১ দেশ বৈঠকে উপস্থিত ছিল। ২২টি দেশ বৈঠকে যোগ দেয়নি। ভোটাভুটিতে অংশ নেয়া ১৩৫টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ১০টি দেশ। ভোটদান থেকে বিরত ছিল ২৬টি দেশ।

এদিকে বরাবরের মতই চীন ও রাশিয়া সরাসরি মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দিয়েছে মোট ১০টি দেশ। এই ১০টি দেশ হলো- রাশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, সিরিয়া, জিম্বাবুয়ে, কম্বোডিয়া, লাউস ও বেলারুশ।

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয়টি হলো- আন্তর্জাতিক বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দিলেও দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপ ছাড়া অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশের পক্ষে মিয়ানমার ইস্যুতে ভোট দেয়নি। ভোট দান থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এজেন্ডা নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে এ ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। পরে বেশিরভাগ দেশের মতামতের ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক অভিযান বন্ধের প্রস্তাব পাশ হয়।

বৈঠকে সেই সাথে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ও বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার এবং তাদের পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনা ও বৌদ্ধ উগ্রবাদীদের বর্বরতা হত্যা, গণধর্ষণ, নির্যাতন থেকে বাঁচতে এখন পর্যন্ত ছয় লাখেরও অধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। অভিযানের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাৎক্ষণিক এক সফরে মিয়ানমার যান। সেখানে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির সাথে একান্তে বৈঠকে মিয়ানমারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। এটি ছিল ক্ষমতায় আসার পর মোদির প্রথম মিয়ানমার সফর।

এদিকে প্রতিবেশী মিত্র দেশে ভারতের অবস্থান নিয়ে শুরুতেই বাংলাদেশ দ্বন্দ্বে পড়ে যায়। কারণ এ সংকটে আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে ভারতকে সবার আগে কাছে পাওয়ার আশা করছিল বাংলাদেশ। তখন মোদির মিয়ানমার সফরের এক সপ্তাহ পরে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে দিল্লি থেকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এক ফোনালাপে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গত ২২ অক্টোবর তিনদিনের সফরে সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশে এলে তখনও তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করার অঙ্গীকারের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের পক্ষে তার সরকারের ইতিবাচক অবস্থান তুলে ধরেন। এ ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর নীতিগত অবস্থানের কথা জানান তিনি।

এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বোঝা সামলাতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত। ভারত মনে করে, রাখাইনে সংঘাত অনতিবিলম্বে বন্ধ হওয়া এবং স্বাভাবিকতা ফিরে আসা উচিত।

একই দিনে সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহের সংগঠন আসিয়ানের (এএসইএএন) দেশগুলোর কূটনীতিকদের সাথে ব্রিফিং শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক জানিয়েছিলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত ও চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে দুই দেশের প্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.