বয়স মাত্র ১০ মাস, আর তাতেই ওজন ২৮ কেজি!

১০ মাস বয়সী একটি শিশুর ওজন ২৮ কেজি! শুনতেই কিছুটা অবাক লাগে। কিন্তু অবাক লাগলেও এমনটিই ঘটেছে মেক্সিকোতে। শিশুটির এমন বাড়ন্ত শরীরের কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে ১০ মাস বয়সী এই শিশুটিই বিশ্বের সবচেয়ে স্থূলকায় শিশু।

মেক্সিকোর কোলিমায় ইসাবেল প্যানতোজা নামে এক মা জন্ম দেন এই শিশুটির। শিশুটির নাম লুইস ম্যানুয়েল। জন্মের সময় শিশুটির ওজন ছিল সাড়ে তিন কেজি। লুইসের তিন বছর বয়সী বড় ভাই মারিও একই ওজন নিয়ে জন্মেছিল বলে জানান প্যানতোজা। কিন্তু লুইসের ওজন দিন দিন বাড়ছে। ২ মাস বয়সে লুইসের ওজন ছিল ১০ কেজি। বর্তমানে ১০ মাস বয়সে লুইসের ওজন ২৮ কেজি!

ডাক্তাররা বলছেন, ১০ মাসেই শিশুটির ওজন ৯ বছর বয়সী বাচ্চার সমান। বিষয়টি নিয়ে লুইসের মা প্যানতোজা ভীষণ চিন্তিত। লুইসকে নিয়ে চিকিৎসকরা আশার কিছুই শোনাতে পারছেন না।

প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা বলেন, 'শিশুটি হয়তো 'প্রাদের-উইলি সিনড্রোম' রোগে ভুগছে। রোগের বৈশিষ্ট্য হলো সব সময় প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগবে এবং মাংসপেশি অনেকাংশে দুর্বল হয়ে যাবে। কিন্তু লুইস খাওয়ার ব্যাপারে একদম পেটুক নয়। স্বাভাবিক খাবারই খাচ্ছে সে।

মেক্সিকোর শিশু পুষ্টিবিদ এবং সার্জন সিলভিয়া ওরোজকো বলছেন, শিশুটির জীবন বিপন্নের পথে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তার টিস্যু পরীক্ষা করতে পাঠিয়েছেন। সেই ফলাফল আসলে তিনি চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।

এই শিশু চিকিৎসক বলছেন, শিশুটি ‘প্রাদের-উইলি সিনড্রোম’ আক্রান্ত নয়। তার মা প্যানতোজা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টির অভাবে ভুগেন। এ কারণেই শিশুটির গ্রন্থিগুলো স্বাভাবিক নয়। তার ধারণা যদি সঠিক হয় তাহলে লুইসকে বাঁচাতে কিছু হরমোন ইনজেকশন দিতে হবে।

জানা গেছে, এই চিকিৎসার প্রতিটি ইনজেকশনের দাম ৫৫৫ ডলার। অন্যদিকে লুইসের বাবা মারিও গঞ্জালেসের মাসিক আয় মাত্র ২০০ ডলার। টেনেটুনে সংসার চালানো বাবার পক্ষে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালানো অসম্ভব। ফলে ছেলেকে বাঁচাতে প্যানতোজা-গঞ্জালেজ দম্পতি ফেসবুকে পেজ খুলে সকলের আর্থিক সাহায্য চাচ্ছেন।

বর্তমানে সপ্তাহে চারদিন লুইসকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। লুইসের শরীর থেকে রক্ত নিতে প্রতিবারই শিরা খুঁজতে হয় নার্সদের। বাবা গঞ্জালেস বলেন, 'নার্সরা যখন লুইসের মোটা হাতের শিরা খুঁজতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যায়, সেই দৃশ্যটা খুব খারাপ লাগে।'