আপনি পড়ছেন

মিশরের সিনাই উপদ্বীপ। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে অবস্থিত এ উপত্যকাটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। বিভিন্ন সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর অভয়ারণ্য এ উপদ্বীপ।

Egypt Sinai Peninsula

গত শুক্রবার জুমার নামাজে ওই এলাকার একটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৩ শতাধিক মুসুল্লি নিহত হয়েছেন। শুক্রবারের ওই হামলায় কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি।

২০১১ সালে আরব বসন্তে প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের উৎখাতের পর সিনাই উপদ্বীপে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তৎপরতা বাড়তে থাকে। পরে মুরসি সরকার গঠন করার পর তা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ২০১৩ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সেনাবাহিনী ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিলে সারা দেশে অস্থিরতা শুরু হয়। এ উপদ্বীপে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীগুলো এর সুযোগ নেয়। তারা এ উপত্যকায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।

সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি সিনাই ও আশপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানের নামে স্থানীয় জনগণের ওপর সেনা দমনাভিযানের কারণে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী তৈরি হয়। এরই মধ্যে উইলায়াত সিনাই নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটে। ২০১৪ সালে তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের সঙ্গে যোগ দেয় বলে অভিযোগ। এই গোষ্ঠীটি অসংখ্য হামলা ও বহু হতাহতের জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষ করে ২০১৫ সালে একটি রাশিয়ান মেট্রোজেট ফ্লাইটের ওপর হামলার দায় স্বীকার করেছে উইলায়াত সিনাই। ওই হামলায় বিমানে থাকা ২২৪ জনের সবাই নিহত হয়েছিলেন।

যে কারণে সুযোগ নিচ্ছে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী: বেদুইন সম্প্রদায়ের অধিকাংশই বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। দারিদ্রতার কারণে মাদক ও মানব পাচারের মতো অবৈধ কর্মকাণ্ডে তারা জড়িয়ে পড়ছে। সিনাই উপদ্বীপের উত্তরাঞ্চলে আইনের শাসনের ঘাটতি রয়েছে এবং আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উইলায়াত সিনাই গোষ্ঠী অনেকটা সহজেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চরম বৈষম্যের শিকার সিনাই বেদুইন সম্প্রদায়ের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ছড়িয়ে দিচ্ছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। 

সিনাই উপদ্বীপ: মিশরে অবস্থিত ত্রিভুজ আকৃতির একটি উপদ্বীপ, যার আয়তন প্রায় ৬০ হাজার বর্গকিলোমিটার (২৩,০০০ বর্গমাইল)। এর উত্তরে ভূমধ্যসাগর ও দক্ষিণে লোহিত সাগর। এটি মিশরের একমাত্র এলাকা যা আফ্রিকায় নয়, এশিয়ায় অবস্থিত এবং কার্যত এই দুটি মহাদেশের মধ্যে একটি ভূমি সেতুর মত কাজ করে। উপদ্বীপের বেশিরভাগ অঞ্চল প্রশাসনিকভাবে মিশরের ২৭টি গভর্নর শাসিত এলাকার ২ টির মধ্যে অন্তর্গত (সুয়েজ খালের দুপাশের অঞ্চল আরও তিনটি প্রশাসনিক এলাকার অন্তর্ভুক্ত)। প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস এই এলাকায়।

ইসরায়েলের সঙ্গে বিরোধ: ১৯৫৬ সালের সুয়েজ সংকটের সময় এ উপদ্বীপের দিকে নজর দেয় ইসরায়েল। ১৯৬৭ সালে মিশরের সঙ্গে ছয় দিনের যুদ্ধে এ এলাকায় আগ্রাসন চালিয়ে তা দখল করে নেয় ইহুদীবাদি ইসরায়েল। সিনাই উপদ্বীপকে মুক্ত করার জন্য ১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর এ অঞ্চলে মিশরীয় ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। আর ১৯৭৯ সালে ইসরায়েল-মিশরের মধ্যে শান্তি চুক্তি সম্পাদন হয়। ১৯৮২ সালে ইসরায়েল সিনাই উপদ্বীপ থেকে তার বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নেয়।

বর্তমান পরিস্থিতি যাই হোক না কেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ প্রবাল প্রাচীরের কারণে এই উপদ্বীপটি পর্যটকদের জন্য এখনও আকর্ষণীয় স্থান।

সূত্র: সিএনএন

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.