আপনি পড়ছেন

নাগরিকপঞ্জী ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ভারত জুড়ে চলছে তুমুল উত্তেজনা। ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের মুসলিমদের বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

demolished in bengaluru

অবস্থা যখন এই তখন এক বিজেপি নেতা তথা বিধায়কের টুইট পোস্টকে কেন্দ্র করে দুই শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। ওই সব বাড়িঘর কথিত বাংলাদেশিদের আস্তানা বলে ভাংচুরের আগে মন্তব্য করেন বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ লিমবাভালি।

যাকে উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তিনি বলছেন, যাদের বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে তারা ভারতেরই লোক এবং তাদের বৈধতার স্বপক্ষে কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু নির্দেশ পেয়েই পুলিশ ও পৌরসভার কর্মীরা ভাংচুর চালায়। তবে ভাংচুরের সময় সেখানে পৌরসভার কোনো কর্মীকে দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশের সহায়তা নিয়ে বিজেপির লোকজন এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, গতকাল রবিবার রাতে বেঙ্গালুরুর উপকণ্ঠে বেলান্দুরে অস্থায়ী ওই সব বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। ফলে বহু পরিবার রাস্তায় এসে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছে।

সমাজকর্মীরা বলছেন, এখানে যারা থাকতেন তাদের মধ্যে রয়েছেন কর্নাটকের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, থাকতেন উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষজনও। এরা বেঙ্গালুরুতে গৃহকর্মী, নির্মাণকর্মী ও নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করে থাকেন।

এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আইনজীবী ও সমাজকর্মী বিনয় শ্রীনিবাস বলেছেন, দুই শতাধিক অস্থায়ী বাড়ি ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। যারা ভাঙতে এসেছিল তাদের মধ্যে অনেকেই সাদা পোশাকে এসেছিল। তাদের বক্তব্য, তারা মারাঠাহাল্লি পুলিশের লোক, পৌরকর্মীদের সুরক্ষা দিতে এসেছে। কিন্তু এলাকায় কোনও পৌরকর্মীর দেখা পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন জিজ্ঞাসা করলাম এ রকম কেন করা হচ্ছে, তাতে তারা বলল এখানকার লোকজন বেআইনি বাংলাদেশি। আমরা যখন নির্দেশের কপি দেখতে চাই তখন তারা ভাঙা বন্ধ করে। অস্থায়ী বাড়িতে যদি বাংলাদেশিরা বাস করে, তাহলে তাদের প্রথমে চিহ্নিত করা হোক, তার পর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সব বাড়ি ভাঙার দরকার কী?’

এই হামলার ব্যাপারে পৌরসভা বা পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।

খবরে বলা হয়েছে, গত ১১ জানুয়ারি মারাঠাহাল্লি থানা ইন্সপেক্টর চেতন বাবু নামের এক জমির মালিককে করিয়াম্মা আগ্রহারায় উচ্ছেদের নোটিস পাঠায়। সে চিঠিতে পুলিশ সোশ্যল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্ট ও ভাইরাল হওয়া ভিডিওর উল্লেখ করে। সেগুলিতে দাবি করা হয়েছিল যে, বেলান্দুরে একটি বেআইনি বাংলাদেশিদের আস্তানা রয়েছে। নোটিসে বলা হয়েছিল, আস্তানা ভেঙে দিয়ে ওদের উচ্ছেদ করুন।

অথচ চেতন বাবু বলেন, ‘এই আস্তানায় যারা থাকেন, তারা সকলেই এদেশি। সকলের কাছে নথি রয়েছে, কিন্তু পুলিশ যেহেতু নোটিস দিয়েছে, আমরা তাই উচ্ছেদ করেছি।’

বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাদের কোনও খবর না দিয়েই বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে। কুমার দাস নামের একজন বলেন, ‘আমরা ভারতীয়, আমাদের কাগজপত্র আছে। পুলিশ এসে কোনও নোটিস না দিয়ে বাড়ি ভাঙতে শুরু করে দিলো। এখানে যারা থাকেন, তারা আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তর কর্নাটকের বাসিন্দা।’

উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি মহাদেবপুরার বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ লিমবাভালি টুইট করে বলেন, বাংলাদেশের লোকজন এই এলাকায় বাস করছে।

তিনি লিখেছিলেন, ‘করিয়ামানা আগ্রহারা এলারায় কিছু লোক বেআইনি আস্তানায় আশ্রয় নিয়েছে। এ এলাকা মহাদেবপুরা বিধানসভার মধ্যে পড়ে। এসব জায়গায় বেআইনি কাজকর্ম চলছে, এদের জন্য পরিচ্ছন্নতার অভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, এ এলাকা বেআইনি কাজকর্মের ঘাঁটি হয়ে উঠছে।’

তিনি লেখেন, ‘সোশাল মিডিয়ার সূত্রে এ বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা পর্যালোচনা করছেন ও ব্যবস্থা নিচ্ছেন। অন্য জায়গা থেকে লোক এসে এখানে বসবাস শুরু করেছে, এদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশের বেআইনি অভিবাসীও রয়েছে।’

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.