করোনাভাইরাস: মারা যেতে পারে সাড়ে ৬ কোটি মানুষ

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে অন্তত সাড়ে ৬ কোটি মানুষ মারা যেতে পারে বলে তিন মাস আগেই সতর্ক করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সে সময় জানানো হয়েছিলো, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে। যার সংক্রমণে ১৮ মাসের মধ্যে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি মানুষ মারা যাবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স সেন্টার হেলথ সিকিউরিটির বিজ্ঞানী এরিক টোনার বলেন, বিশ্বব্যাপী নতুন ধরনের কোনো একটি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে বহুদিন ধরেই তিনি ভেবেছিলেন। তাই সম্প্রতি চীনে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটায় তিনি মোটেও অবাক হননি।

বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিজ্ঞানীদের কল্পিত করোনাভাইরাসটির নাম ‘ক্যাপস’। ভাইরাসটি নিয়ে তারা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এবং বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে গবেষণা করেন। এ জন্য বাছাই করা হয় ব্রাজিলের বিভিন্ন শুকরের খামার। তাদের ধারণা ছিল, ওই খামারগুলো থেকে কোনো করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, বিজ্ঞানীরা কল্পনাপ্রসূত ভাইরাসটি বিশ্লেষণ করে দেখতে পান, এটি খুব সংক্রামক হওয়ায় প্রাথমিকভাবে নিউমোনিয়া বা ফ্লুর আকারে ছোট পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে। পরবর্তীতে তা দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। গুজব এবং ভুয়া তথ্যের কারণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াবে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে।

সম্প্রতি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসটির সঙ্গে বিজ্ঞানীদের কল্পিত ভাইরাসটির মিল পাওয়া গেছে। এটিও বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। শহরটি থেকে অন্যান্য প্রদেশে যাওয়ার সকল বাস-ট্রেন এবং বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে চীন সরকার। গত সপ্তাহে হংকংয়ের শেয়ার বাজারে দরপতন হয়েছে প্রায় ২.৮ শতাংশ।

চীনের সরকারি গণমাধ্যম বলছে, প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যাও প্রায় এক লাখ ছাড়িয়েছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ায় আক্রান্তদের মৃত্যুর আশঙ্কা শতভাগ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া নাক, সাইনাস বা গলার উপরিভাগে সংক্রমণ ঘটায়। নতুন এ ভাইরাসের সঙ্গে প্রাণঘাতী সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমের (সার্স) মিল রয়েছে, যা অনেকটা ফ্লুয়ের মতো। ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে ৭০০ জন মানুষের মৃতু হয়।