আপনি পড়ছেন

সার্স (SARS) বা সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোমের মতো উপসর্গ। পরিণতি ভয়ঙ্কর মৃত্যু। রহস্যময় নোভেল করোনাভাইরাসের (2019-nCoV) সংক্রমণ কি সত্যিই ছড়িয়েছিল উহানের সি-ফুড মার্কেট থেকে? আর পাঁচটা করোনাভাইরাসের থেকে আলাদা এই ভাইরাসের উৎস কোথায়? সত্যিই কি ভাইরাস, না মারণাস্ত্র? এই প্রশ্নগুলোই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে। ইসরায়েলি সেনা-গোয়েন্দা এবং মাইক্রোবায়োলজিস্টদের মতে, এই ভাইরাসের জন্মদাতা উহানের জৈব রাসায়নিক মারণাস্ত্র তৈরির কারখানা বায়ো-সেফটি লেভেল ৪ (BSL-4) ল্যাবোরেটরি।

labratory uhan china

কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে, অসাবধানতাবশত এই গবেষণাগার থেকেই ছড়িয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণ। ঠিক যেভাবে একটা সময় সার্স এবং ইবোলা প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে আঙুল উঠেছিল এই ল্যাবোরেটরির দিকেই।

প্রশ্ন আরও উঠেছে। সত্যিই কি ল্যাবোরেটরি থেকে অসতর্কতাবশত ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে নিজেদের শক্তি জাহির করতে চাইছে কি চীনা কমিউনিস্ট পার্টি!

মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, সিঙ্গল-স্ট্র্যান্ডেড এই আরএনএ ভাইরাসকে তৈরি করা হয়েছে মরণাস্ত্র হিসেবেই। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছোবলে শত শত প্রাণনাশ করা সম্ভব। উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির বিএসএল-৪ ল্যাবোরটরিতে অতি গোপনে এই জৈব রাসায়নিক মরণাস্ত্র তৈরির কাজ চলছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। হয় সেখান থেকেই ভাইরাস কোনওভাবে বাইরে চলে গেছে, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবেই সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

দ্য ওয়াল বলছে, ২০১৫ সালে রেডিও ফ্রি এশিয়ার একটি রিপোর্টে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে ভয়ঙ্কর, প্রাণঘাতী সব ভাইরাস নিয়ে কাজ করছেন গবেষকরা। এর অর্থ জৈব রাসায়নিক মরণাস্ত্রের দিকে ক্রমশ ঝুঁকছে বেইজিং। পরবর্তীকালে ইসরায়েলি সেনা গোয়েন্দা দফতরের প্রাক্তন প্রধান লেফটেন্যান্ট ড্যানি শোহাম বলেছিলেন, বায়ো-ওয়ারফেয়ারের জন্য তৈরি হচ্ছে চীন। জিনের কারসাজিতে এমন ভাইরাস তৈরি করা হচ্ছে যার প্রভাব হবে সাংঘাতিক। প্রতিরোধের আগেই মহামারীর চেহারা নেবে এই সব ভাইরাসের সংক্রমণ। যে দেশের ওপর আঘাত হানা হবে, সেখানে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়ে যাবে।

১৯৭০ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বেই রাসায়নিক মরণাস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে উহানকে দ্বিতীয় জৈবঅস্ত্র গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে বেইজিং।

লেফনেটন্যান্ট ড্যানি শোহাম ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সার্স, এইচ৫এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, জাপানি এনকেফ্যালাইটিস, ডেঙ্গুর মতো রোগ ছড়ানোর পেছনেও উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিই দায়ী। ভবিষ্যতে এমন প্রাণঘাতী ভাইরাস আরও অনেক তৈরি হতে পারে বলে আগাম সতর্কও করেছিলেন তিনি।

২০০২ থেকে ২০০৩ সাল। মহামারীর আকার নিয়েছিল ‘সার্স’ (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) । চীনের মূল ভূখণ্ডেই মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৪০০ জনের। হংকংয়ে অন্তত ৩০০।

২০০৯ সালে ফের সোয়াইন ফ্লুর ছোবল। শয়ে শয়ে মৃত্যু। সরকারি হিসাবেই সংখ্যাটা ছিল সাত শ’র কাছাকাছি। সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল বিএসএল ৪ ল্যাবোরেটরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) তো বটেই আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC) জানিয়েছিল, ওই ল্যাবোরেটরিতে ভাইরাস নিয়ে কাজ হলেও, গবেষকরা অনেক বেশি সচেতন থাকেন। ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে এই ল্যাবোরেটরির জন্যই রয়েছে আলাদা উইং, যার বাইরের পরিবেশের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তবে সার্স ও ইবোলা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার পর অভিযোগের আঙুল ওঠে এই গবেষণাগারের দিকেই। বলা হয়, রোগ প্রতিরোধ নয়, বরং প্রাণঘাতী জৈব অস্ত্র বানাতেই মত্ত গবেষকরা। যারই পরিণতি হাজার হাজার মৃত্যু।

প্রসঙ্গত, গেল ৩১ ডিসেম্বর থেকেই উহানে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে এই তথ্যও মানতে রাজি নন ইসরায়েলি মাইক্রোবায়োলজিস্টরা। তাদের দাবি, অনেক আগে থেকেই নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।

ডাক্তাররা বলেছিলেন, উহান নিউমোনিয়া। রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চুপিচুপি চিকিৎসা চলছিল। পরে মানুষের থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে হুহু করে। উহানের বিভিন্ন হাসপাতালে যে ৪১ জন রোগীর প্রথম চেস্ট এক্স-রে হয়, তাদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেও দেখা যায় কোনও খোলা বাজার থেকে বা পশুপাখির সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়নি। এই সংক্রমণের পেছনে অন্য কারণ রয়েছে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.