করোনার ‘কার্যকর’ ভ্যাকসিন আনার দাবি মার্কিন বিজ্ঞানীদের

মরণঘাতী করোনাভাইরাসের টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার নিয়ে দিন-রাত কাজ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে অনেকে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন আনার দাবিও করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার বাস্তব কোনো কার্যকারিতা প্রমাণ হয়নি। এই অবস্থার মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে সুখবর দিলেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।

করোনার কার্যকর ভ্যাকসিন আনার দাবি মার্কিন বিজ্ঞানীদের। ছবি- নিউইয়র্ক পোস্ট

আমেরিকার পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গ ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা একটি কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রাণি তথা ইঁদুরের শরীরে সেটা প্রয়োগ করে অ্যান্টিবডি তৈরির প্রমাণ পাওয়া গেছে। মার্কিন প্রশাসনের অনুমোদন এবং পর্যাপ্ত অর্থ পেলে অল্প সময়ের মধ্যে সেটি মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা যাবে বলেও আশাবাদী ওই গবেষকরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ওই গবেষকরা এক ঘোষণায় বলেন, তাদের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি নতুন এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।

মার্কিন প্রভাবশালী গণমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গবেষকরা ভ্যাকসিনটির নাম দিয়েছেন ‘পিটকোভ্যাক’। যার পূর্ণরূপ হলো- পিটসবার্গ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন।

জানা গেছে, ইতোমধ্যে বিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট জার্নালে ভ্যাকসিনটির বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

২০০৩ সালের সার্স করোনাভাইরাস এবং ২০১৪ সালের মার্স করোনাভাইরাসের অভিজ্ঞতার আলোকে পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার আন্দ্রে গামবট্টোনতুন বলছেন, নতুন নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম তাদের এই ভ্যাকসিন। 

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। তবে ভ্যাকসিনটি প্রস্তুত করতে অর্থ লাগবে।’ বর্তমানের এই করোনার সংক্রমণ থামানো না গেলে পরবর্তী পরিস্থিতি কী হবে তা জানা নেই বলেও সতর্ক করেন এই গবেষক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ভ্যাকসিনটির অনুমোদনের জন্য। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মানুষের শরীরে এটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করা যাব বলে আশাবাদী ওই গবেষকরা।

গত বছরের শেষ প্রান্তে চীনের উহানে শনাক্ত করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে বিশ্বের ২০৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

মার্কিন গণনাকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, গোটা বিশ্বে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ২১ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে প্রায় সাড়ে ৫৩ হাজার। এ ছাড়া সুস্থ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার।