পিছু হটলেন নেতানিয়াহু!

ইসরায়েল পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিন অধ্যুষিত অঞ্চল ও জর্ডান ভ্যালি দখলের পরিকল্পনা থেকে আপাতত পিছু হটলো বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, এই পরিকল্পনাকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলমান এবং পরিকল্পনা কার্যকরে আরো দেরি হবে। 

পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অঞ্চল দখলের পরিকল্পনা করেছেন নেতানিয়াহু

দ্য নিউ আরবের বরাতে জানা যায়, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত দূত অ্যাবি বারকোউইতজ এবং ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রাইডম্যানের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ কথা জানান নেতানিয়াহু। দখল পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরেই দুই পক্ষ আলোচনা করে যাচ্ছে।

নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আলোচনা করছি। এ বিষয়ক আলোচনা আগামী কয়েকদিন চলবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী আজ ১ জুলাই পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিন অধ্যুষিত অঞ্চল ও জর্ডান ভ্যালির ৩০ শতাংশ এলাকা দখলে নেওয়ার কথা ইসরায়েলের। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মরিয়া নেতানিয়াহু। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়ায় তারা অগ্রসর হতে পারছে না। আলোচনা চলমান থাকায় নেতানিয়াহুকে তাই আরো অপেক্ষা করতে হবে।

পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অঞ্চল দখলের পরিকল্পনা করেছেন নেতানিয়াহু

এই পরিকল্পনার গোড়াপত্তন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারিতে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও পশ্চিম তীরের জটিলতা নিরসনে কথিত ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামে চুক্তি উত্থাপিত করেন। সেই চুক্তি ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করলেও ইসরায়েল তাতে রাজি হয়। এর ওপর ভিত্তি করেই পশ্চিম তীরে দখল কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায় তেলআবিব।

তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকলেও বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তি ও রাষ্টগুলো এর বিরোধিতা করেছে। সেইসঙ্গে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লীগের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে। ফিলস্তিনিদের সার্বভৌমত্বকে হুমকিতে ফেলে দেবে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও ইসরায়েলিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে। যদি তারা সে রকম কোনো কিছু করে তাহলে ব্রিটেন তার স্বীকৃতি দিবে না। ১৯৬৭ সালে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যে চুক্তি হয়েছে তাকেই সমর্থন করি আমরা।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইসরায়েল এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে যে দ্বি-রাষ্ট্রের কথা বলা হচ্ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়বে এবং নতুন সংকট দেখা দেবে।