লকডাউন ভঙ্গ করায় ছেলেকে পুলিশে দিলেন মেয়র

বিশ্বব্যাপী চলছে করোনাভাইরাসের মহামারি। দিনরাত চেষ্টা করেও এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেননি গবেষকরা। তাই সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এ লক্ষ্যেই দেশে দেশে চলছে কারফিউ, লকডাউন ও ১৪৪ ধারা কিংবা অন্য কোনো বিধি-নিষেধ। তবে এসব নিয়ম ভঙ্গের ঘটনাও যে ঘটছে না, তা কিন্তু নয়।

মেয়র কার্লোস হিগিন্স ভিল্লানুয়েভা (বামে লাল গেঞ্জি পরিহিত)

তবে কিছু কিছু দেশ আছে যেখানে প্রভাবশালীরা এসব নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। কারণ নিয়ম না মানলে তাদের কিছু হয় না। কারণ তাদের হাতেই ক্ষমতা বা প্রভাব-প্রতিপত্তি। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে ভুরি ভুরি। যারা ক্ষমতা বা প্রভাব থাকা সত্ত্বেও আইন মানতে কার্পণ্য করেন না। নিজের কেউ আইন লঙ্ঘন করলেও সমান শাস্তির ব্যবস্থা করেন।

সে রকমই একটি উদাহরণ সৃষ্টি করলেন কলম্বিয়ার এক মেয়র। লকডাউন না মানায় নিজের ছেলেকে নিজে নিয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে এলেন। যার জন্য ব্যাপক প্রশংসাও পাচ্ছেন তিনি।

বিবিসি বলছে, অনেক দেশেই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ উঠেছে যে, তারা বা তাদের আত্মীয়-স্বজনরা লকডাউনের বিধি-নিষেধ মানছেন না, তখন এক প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ওই মেয়র।

সংক্রমণ ঠেকাতে ভেনিজুয়েলার সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে কলম্বিয়া

জানা যায়, কলম্বিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় একটি শহরের মেয়র কার্লোস হিগিন্স ভিল্লানুয়েভা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটিতে চলছে লকডাউন ও অন্যান্য বিধি-নিষেধ। কিন্তু সেই বিধি-নিষেধ ভেঙে তার ছেলেই কি না মদের আসরে বসেছিল। তাই ছেলে ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেন তিনি। নিজের গাড়িতে করে ছেলে, ভাগ্নে ও তাদের একজন বন্ধুকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে পৌঁছে দেন।

স্থানীয় একটি রেডিওকে কার্লোস হিগিন্স বলেন, লোকজনের মাধমে তিনি জানতে পারেন যে, তার ছেলে বন্ধুদের নিয়ে একটি বাড়িতে জড়ো হয়ে মদ খাচ্ছিল। তাই আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলছেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি তো আমার আত্মীয়-স্বজনেরই উচিত সবার আগে সম্মান জানানো। আমার আত্মীয়-স্বজনের কারণে শহরের মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে, সেটা আমি মেনে নিতে পারি না।

এদিকে, মেয়র কার্লোস হিগিন্সের এই পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সবাই। সেইসঙ্গে তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছেন।

মার্কিন জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, কলম্বিয়ায় এ পর্যন্ত ৯৭ হাজারের বেশি লোক ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছে। মারা গেছে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি। তবে সুস্থ হয়েছে ৪২ হাজারের বেশি।