ভিড় হয় এমন জায়গায় মাস্ক পরতেই হবে

বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক পড়া অতীব জরুরি এমন বার্তাই গত কয়েক মাস বিশ্ববাসীকে শুনিয়ে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এবার সে সুরে তাল মেলালো যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল একাডেমি অব সাইন্স ও রয়াল সোসাইটির গবেষকরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে।

মাস্ক পরে হাঁটছেন দুই ব্রিটিশ নাগরিক

রয়াল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক স্যার ভেঙ্কি রামাকৃষনান বলেন, যখনই কেউ গণজমায়েত হয় এমন স্থানে যাবে তখনই মাস্ক পরতে হবে। বিভিন্ন গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, মাস্ক পরিধান একজন ব্যক্তিকে ও তার আশপাশে থাকা অন্যান্যদের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া থেকে বাঁচাতে পারে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে মাস্কের ব্যবহার খুব কম। বিশ্বের অনেক অনুন্নত দেশের তুলনায়ও এখানকার মানুষ কম মাস্ক ব্যবহার করেন। আর উন্নত দেশের কথা নাই বললাম।

বিবিসির বরাতে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মাস্ক সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এর আগে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়, বাইরে সব জায়গায় মাস্ক পরতে হবে না। পরে আবার জানানো হয়, মাস্ক পরিধান করতে হবে। এসব কারণে মানুষ বুঝতে পারছে না আসলে কি করতে হবে।

মাস্ক পরে হাঁটছেন নাইজেরিয়ার নাগরিকরা

বিষয়টি নিয়ে সেখানকার নাগরিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন মাস্কের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্তে। কারণ এর আগে এক গবেষণায় দেখা যায়, এশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্রে মাস্ক পরিধান করেও ভাইরাসটির সংক্রমণ দমানো যাচ্ছে না। যার দরুণ ভেবে নেওয়া হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে মাস্ক কার্যকর কোনো প্রভাব রাখে না।

বিবিসি বলছে, রয়াল সোসাইটি এই মাস্ক পরিধান নিয়ে সম্প্রতি দুটি গবেষণা করেছে। এতে দেখে যায়, ব্রিটিশ নাগরিকরা এর ব্যবহার নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন, যার জন্যে দায়ী নীতিমালা। সরকার থেকে যে নীতিমালা দেয়া হয়েছে তা জনগণকে সঠিক বার্তা দিতে পারেনি।

তাদের গবেষণা বলছে, এপ্রিলে যুক্তরাজ্যের মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ ফেস মাস্কের ব্যবহার করেছে। ইতালিতে সেসময় ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ দশমিক ৮ শতাংশ, স্পেনে ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেছে। সে তুলনায় যুক্তরাজ্যের সংখ্যা বেশ কমই বলা চলে। সরকার হতে মানুষের কাছে যে নীতিমালা দেয়া হয়েছে তা পরিষ্কার বার্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই এই অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক রামাকৃষনান বলেন, করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মাস্ক বিহীন বাইরে থাকার মানে হচ্ছে আপনি মদ্যজাত পানীয় খেয়ে গাড়ী চলাচ্ছেন। তাই বাড়ির বাইরে সবাইকে মাস্ক পরধান করতে হবে। ভিড় হয় এমন স্থানে তো মাস্ক ছাড়া থাকাই যাবে না।