করোনার ‘ওষুধ’ আবিষ্কারের ঘোষণাতেই কোটিপতি তারা!

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাউথহ্যাম্পটনের তিন গবেষক করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার করেই বনে গলেন কোটিপতি। তাদের উদ্ভাবিত ইনহেলারের মাধ্যমে দেয়া ওষুধ আক্রান্ত রোগীদের ওপর বেশ ‘কার্যকর’ প্রমাণিত হয়েছে।

বাম থেকে রাতকো ডেজুকানোভিক, ডোনা ডেভিস এবং স্টেফেন হোলগাতে

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের বরাতে জানা যায়, তিনজন গবেষক হলেন- রাতকো ডেজুকানোভিক, স্টেফেন হোলগাতে এবং ডোনা ডেভিস। ৯০ দশকে তারা অ্যাজমা ও ফুসফুসে একটি প্রোটিন ইন্টারফেরেন বেটার অনুপস্থিতি নিয়ে কাজ করা শুরু করেন। এই প্রোটিন না থাকার কারণে একজন মানুষের সাধারণ ঠাণ্ডা হলেও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

পরে তারা বিষয়টি নিয়ে আরো গবেষণা কার্যক্রমের জন্য সাইনারজেন নামে একটি ফার্ম তৈরি করেন। সেখানেই বিভিন্ন গবেষণায় তারা ইন্টারফেরন বেটা প্রোটিন সংবলিত এসএনজি০০১ ওষুধটি তৈরি করতে সক্ষম হন। যা ফুসফুসে সংক্রমণ ও ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভালো কাজ করেছে।

ইনহেলার

সাইনারজেনের প্রধান কর্মকর্তা রিচার্ড মারসডেন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা বুঝলাম, আমাদের এই পরিস্থিতিতে খুব বড় একটি ভূমিকা রয়েছে। সে মোতাবেক আমরা ফেব্রুয়ারি ও মার্চের দিকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করে দিলাম। ইনহেলার আকারে রোগীদের এসএনজি০০১ ওষুধটি দেয়া হয়েছে।

এই গবেষণায় যুক্ত থাকা গবেষকরা বলছেন, হাসপাতালে যাদের ভেন্টিলেশন দেয়া হয়েছিল তাদের এই ইনহেলার দেয়ার পর ৭৯ শতাংশকে সুস্থ হতে দেখা গেছে। অন্যান্য চিকিৎসার তুলনায় যা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়নি এমন রোগীদের দুই দফায় ইনহেলার দেয়ার পর রোগীদের মধ্যে ১৬ দিন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা দেয়নি। তাই বলা যায়, এটি রোগীদের বেশ দ্রুত সুস্থ করে তুলতে সহায়তা করে।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরই সাইনারজেন ফার্মের শেয়ার মূল্য বাড়তে শুরু করে। প্রকাশের দিন ২১ জুলাই ফার্মটির শেয়ার দর ৫৪০ শতাংশ বেড়ে যায়। এতে ইউনিভার্সিটি অব সাউথহ্যাম্পটনের ওই তিন গবেষকদের মধ্যে ডেজুকানোভিকের সম্পদ ৩ লাখ পাউন্ড থেকে বেড়ে ১৬ লাখ পাউন্ডে (১৭ কোটি টাকার বেশি) পৌঁছায়। হোলগাতের সম্পদ বেড়ে হয় ১৭ লাখ পাউন্ড (প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি) এবং ডোনা ডেভিসের সম্পত্তিও সম পরিমাণ বেড়েছে।