ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরকে যুক্ত করে পাকিস্তানের মানচিত্র প্রকাশ

পাকিস্তান যেন নেপালের পথ অনুসরণ করলো। এবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরকে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ। গত বছরের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে ভারত। সেইসঙ্গে রাজ্যটিকে দুটি প্রশাসনিক এলাকায় ভাগ করে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। ওই ঘটনার বর্ষপূর্তির ঠিক আগের দিন গতকাল মঙ্গলবার এই মানচিত্র উদ্বোধন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি।

ইমরান খান

পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন এ খবর দিয়েছে।

নতুন মানচিত্র উদ্বোধন উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমরান খান। এতে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদ অনুমোদন দিলেই সেটিই দেশটির ‘সরকারি মানচিত্র’ হবে। দেশটির স্কুল-কলেজ তথা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন এই মানচিত্রই ব্যবহৃত হবে।

ভারত সরকার যে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছে, তাকে প্রত্যাখ্যান করেই নতুন এই মানচিত্র করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই নতুন মানচিত্রকে সমর্থন করেছে দেশের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক মানচিত্র

ইমরান খান বলেন, একমাত্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাশ্মির সমস্যার সমাধান করতে হবে। সংস্থাটির সিদ্ধান্তে কাশ্মিরি জনগণকে তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। কাশ্মিরিদের সেই অধিকার এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সেটাই একমাত্র সমাধান। তার সরকার এ ব্যাপারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি নতুন মানচিত্রের পরিবর্তন তুলে ধরে বলেন, আগেই চালু করা হয় তাদের প্রশাসনিক মানচিত্র। তবে নতুন এই মানচিত্রে মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে, যা এই প্রথম।

পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দখলকৃত কাশ্মিরকে মানচিত্রে একটি বিতর্কিত অঞ্চল হিসেবে দেখা যায়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিদ্ধান্তই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান। যার মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।

শাহ মেহমুদ কোরেশি

নতুন রাজনৈতিক মানচিত্রের বিষয়ে পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে কোরেশি বলেন, দেশের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ, কাশ্মিরি নেতৃত্ব এবং পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।

তিনি বলেন, এর মাধ্যমে কাশ্মিরি জনগণ একটি স্পষ্ট বার্তা পাবে যে, পাকিস্তান সরকার অতীতেও তাদের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকবে।

দিনটিকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ এক ঐতিহাসিক দিন এবং আমাদের গন্তব্য শ্রীনগর (ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের রাজধানী)।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি নেপাল সরকারও ভারতের দাবি করা কয়েকটি এলাকা নিয়ে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে। তাদের সেই মানচিত্র পার্লামেন্টে পাস হয়েছে এবং এখন তারা সেটিকে জাতিসংঘ ও গুগলের কাছে পাঠাবে বলে জানিয়েছে।