আমিরাত-ইসরায়েল চুক্তিতে বিশ্বমহলের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্ততায় চুক্তি স্বাক্ষর করেছ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েল। এই চুক্তির ফলে দুই পক্ষের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হবে। একে ঘিরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিব, মিশরের প্রেসিডেন্টসহ বিশ্বমহলের নেতারা সরব প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের পতাকা

চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও আবু ধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ আল নাহিয়ান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে ঐতিহাসিক এই চুক্তির কারণে। এর মাধ্যমে পশ্চিম তীর নিয়ে ইসরায়েলি পরিকল্পনা স্থগিত হলো।

প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও। এই ঘটনাকে 'বিরাট ভালো খবর' আখ্যা দিয়ে টুইটে বলেন, আমিরাত ও ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থিতিশীল করার এই চুক্তি বিরাট ভালো খবর।

আগামী মার্কিন নির্বাচনের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন এ প্রসঙ্গে বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েল রাষ্ট্র বৈধতা পেলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য থেকেও এবার স্বীকৃতি এলো। আমি একে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। এই চুক্তির ফলে ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু ইসরায়েল যদি পশ্চিম তীর দখল করে তাহলে শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। আমি এই দখলের বিরোধিতা করি এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও করবো।

আল নাহিয়ান, ডোনাল্ড ট্রাম্প (মাঝে) ও নেতানিয়াহু

ওমান সরকার এক বিবৃতিতে আমিরাতকে এই চুক্তির জন্য সমর্থন দিয়েছে। তারা বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তারাও অংশ নিতে যায়।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসি বলেন, চুক্তির ফলে পশ্চিম তীরে দখল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেল। এক টুইটে তিনি বলেন, আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আমিরাত ও ইসরায়েলের যৌথ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তাদের এই সিদ্ধান্তে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা একটু শান্তি পেল।

সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের চুক্তির খবরকে স্বাগত জানিয়েছে বাহরাইন। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের বিশ্বাস এই পরিকল্পনা শান্তি প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রাখবে।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, ইসরায়েল যদি এই চুক্তিকে ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী বিবেচনা করে ইসরায়েল রাষ্ট্র হিসেবে চিন্তা করতে পারে, তাহলে ওই অঞ্চলে অবশ্যই শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। যদি না তা না হয়, তাহলে সংঘাত আরো বাড়বে।

জাতিসংঘ মহাসচিব এন্থেনিয় গুতেরেসও এই চুক্তি নিয়ে নিজের মতামত দিয়েছেন। তার এক মুখপাত্র বলেছেন, যে কোনো চুক্তি যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে তা স্বাগাত জানান গুতেরেস।

সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও এই পদক্ষপের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, নেতৃত্ব, সাহস ও চিন্তাশক্তির বড় একটি উদাহরণ এই চুক্তি। পশ্চিম তীরে দ্বি-রাষ্ট্রনীতি পুনরায় চাঙ্গা হয়ে গেল। মুখ থুবড়ে পড়লো দখল পরিকল্পনা।

তবে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে হামাস। হামাসের মুখপাত্র ফাউজি বারহুম বলেন, এতে ফিলিস্তিনের কোনো লাভ হবে না। কোনো অধিকারও প্রতিষ্ঠা হবে না। সন্ত্রাসবাদ ও দখলের সমর্থনেই এই চুক্তি। আমিরাত ফিলিস্তিনিদের পিঠে ছুরি মেরেছে।