বাংলাদেশেও আসছে ‘বাঁশের তৈরি’ বিস্কুট

বাঁশ আমাদের সবারই পরিচিত একটি গাছ। দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই এই গাছটি জন্মাতে দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার ও নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাঁশঝাড় বা বাঁশবনের দেখা মেলে। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন আসবাবপত্র। নির্মাণ কাজেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এ ছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এ গাছটির নানা অংশ খেয়েও থাকেন। তবে এবার ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হলো বিস্কুট।

বাঁশের কোঁড়ল দিয়ে তৈরি বিস্কুট। ছবি- সংগৃহীত

গত শুক্রবার ছিলো অন্তর্জাতিক বাঁশ দিবস। ওইদিনই বাঁশ বা বাঁশের কোঁড়ল দিয়ে বিস্কুট তৈরির কথা জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। শুধু বাঁশ দিয়ে বিস্কুট তৈরি ঘোষণা দেওয়া নয়, তিনি নিজে সেটি খেয়েও দেখছেন। আর সেই ছবিই পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে।

বাঁশ বা বাঁশের কোঁড়ল দিয়ে তৈরি এ বিস্কুট একদিকে যেমন একেবারেই নতুন এক খাদ্য, তেমনি এটি স্বাস্থ্যকরও। এ অভিনব বিস্কুট তৈরি করেছে ত্রিপুরার সরকারি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্যাম্বু অ্যান্ড কেইন ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিসিডিআই)। এই সংস্থাটি আখ ও বাঁশের ফলন নিয়ে গবেষণা করে থাকে। পাশাপাশি সেগুলো দিয়ে নানা ধরনের কৃষিপণ্য তৈরির বিষয়েও গবেষণা করে থাকে।

শুক্রবার বাঁশের বিস্কুটের কথা টুইটারে জানান ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব

ত্রিপুরা সরকার জানায়, মূলত বাঁশের কোঁড়লকে পেস্ট করে তার সঙ্গে আটা, ময়দা ও বিস্কুট তৈরির অন্যান্য উপকরণ মিশিয়েই তৈরি করা হয় এই বিস্কুট। বাঁশ দিয়ে তৈরি করায় এতে রয়েছে ভিটামিনস, মিনারেলসের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর উপদান। যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

এই বিস্কুট তৈরি করেছেন বিসিডিআইয়ের গবেষকরা। যার নেতৃত্ব দিয়েছেন বিসিডিআইয়ের প্রধান ড. অভিনব কান্ত।

তাদের দাবি, এই বিস্কুট প্রাণঘাতী ক্যান্সার ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়া এটি মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করবে। প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকায় এ বিস্কুট হজমেও উপকার দেবে।

রাজ্য সরকার আরো জানায়, ভারতের বাজারে এ অভিনব বিস্কুট যেমন বিক্রি করা হবে, তেমনি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেও এটি রপ্তানির বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা। সম্প্রতি নৌ-পথে বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার যে যোগাযোগ শুরু হয়েছে, সেই পথেই এই বিস্কুট পাঠাতে চায় ভারতের এ রাজ্যটি। 

মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব আরো জানান, ত্রিপুরা রাজ্যে যে পরিমাণ বাঁশ জন্মে তার ৮০ শতাংশই হলো মুলি বাঁশ। এ বাঁশ দিয়ে বিস্কুট তৈরি করা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা যায়। আগামীতে এ বাঁশ দিয়ে মধু বাজারজাতকরণ শিশি তৈরির চিন্তা-ভাবনা করছেন তারা।

ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এ প্রিমিয়ার প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য ত্রিপুরার বাজার খুবই ছোট। তাই তারা এর সাফল্যের জন্য বাংলাদেশে পণ্যটি বিক্রি করেতে চাচ্ছেন। কারণ তাদের বিশ্বাস, ঢাকা বা চট্টগ্রামে এ পণ্যটির ব্যাপক চাহিদা থাকবে।