ঘোষণা দিয়ে ফ্রান্সের পাশে ভারত

মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করে ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় মদদে চলছে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.) কে অবমাননা। এর বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, বিশ্ব মুসলিম নেতারাও সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন। দেশে দেশে চলছে ফরাসি পণ্য বয়কটের আন্দোলন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ।

মোদি ও ম্যাক্রোঁ

এই ইস্যুতে ম্যাক্রোঁর সমালোচনায় সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর বিপরীত মেরুতে থাকা ভারত এবার বিবৃতি দিয়ে ফ্রান্স ও ম্যাক্রোঁর পাশে দাঁড়িয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণোলয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ম্যাক্রোঁকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে ও যে ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি আন্তর্জাতিক সব নিয়মের লঙ্ঘন। এর তীব্র নিন্দা জানায় নয়া দিল্লি।

এতে আরো বলা হয়, কার্টুনকে কেন্দ্র করে ফরাসি শিক্ষকের নৃশংসভাবে হত্যার নিন্দা জানাচ্ছে ভারত। এ হত্যাকাণ্ড পুরো বিশ্বকে ধাক্কা দিয়েছে, কোনো অবস্থাতেই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা যায় না। নিহত শিক্ষকের পরিবার ও ফরাসি জনগণকে ভারতের পক্ষ থেকে শোক জানানো হচ্ছে।

পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

ডয়চে ভেলে বলছে, এভাবে ম্যাক্রোঁ ও ফ্রান্সকে সমর্থনের মধ্য দিয়ে পরোক্ষভাবে তুরস্ক ও পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছে ভারত। ম্যাক্রোঁ ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সরব থাকা দেশ দুটির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয় নয়া দিল্লির।

যদিও বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশের চেয়েও ভারতে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি, এমনকি এ ইস্যুতে ম্যাক্রোঁ ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তারাও প্রতিবাদ করছেন। তবে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে ভারতের হিন্দুদের বেলায়। তারা ফ্রান্সের সমর্থনে হ্যাশট্যাগ ‘উই স্ট্যান্ড উইথ ফ্রান্স’ প্রচারণা চালাচ্ছে।

এদিকে, ভারতের এ বিবৃতির পর দেশটিতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত টুইট করে নয়া দিল্লিকে ধন্যবাদ জানান। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ফ্রান্স ও ভারত সব সময় একসঙ্গে লড়াই করে যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, আল্লাহর রসুল সা.কে নিয়ে ফ্রান্সের বিতর্কিত ম্যাগাজিন শার্লি হেবদো ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করার পর তা প্যারিসের পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলের ক্লাসে প্রদর্শন করেন এক শিক্ষক। এ ঘটনায় এক মুসলিম শিক্ষার্থী ওই শিক্ষককে হত্যা করে। এর পর ক্ষেপে যান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রধান হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই কার্টুন প্রদর্শনের ঘোষণা দেন।