ওবামা: ভাগ হয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রাট প্রার্থী জো বাইডেন বিজয়ী হয়েছেন, হেরে গেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ফল প্রত্যাখান করে নিজেকে জয়ী দাবি করছেন ট্রাম্প, দ্বারস্থ হয়েছেন আদালতেরও। এমতাবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে মার্কিনীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ক্রমেই বাড়ছে। অনেকে সামাজিক বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়েও হুঁশিয়ার করেছেন।

জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দেয়া একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মার্কিন সমাজের বিভক্তির বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, উভয় প্রার্থী ৭ কোটির বেশি ভোট পেয়েছেন। সামাজিক বিভক্তি সৃষ্টির সবচেয়ে বড় প্রমাণ এটি।

নির্বাচনের ফলে কারচুপি নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখান করেছেন নির্বাচনী কর্মকর্তা ও বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। তারপরও ট্রাম্পের দাবির বিরোধিতা করছেন না অনেক রিপাবলিকান নেতা। বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে ওবামা বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, আইনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয়। এটাই ডেমোক্রেটিক দলের মূল বিশ্বাস।

নির্বাচনের পর থেকেই নিজেকে বিজয়ী দাবি করে আসছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সর্বশেষ গতকাল সোমবার এক টুইটে বলেন, নির্বাচনে আমিই জিতেছি। এর আগের টুইটে ট্রাম্প বলেছিলেন, কারচুপির নির্বাচনে বাইডেন জিতেছে, আমি মেনে নেইনি! পরে অপর এক টুইটে বলেন, এটা ছিল জালিয়াতির নির্বাচন, আমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প, পেছনে ওবামা ও ডানে বাইডেন

এর জবাবে গতকালই ট্রাম্পের ধারাবাহিক এমন আচরণকে ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জো বাইডেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, যথাসময়ে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধা দেয়ার চেষ্টা হলে করোনার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে আমরা হেরে যেতে পারি, যা কারো জন্যই ভালো হবে না। নিজেদের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব চলতে থাকলে দেশে ভয়াবহ অবস্থা দেখা দেবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন নির্বাচনের আগে-পরের উত্তেজনা এবং ফল মানা-না মানা নিয়ে কাণ্ডকারবারে সামাজিক বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এটি সমাজিক বিশৃঙ্খলায় রূপ নিলে তা দেশটির জন্য লজ্জাজনক হবে। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে মার্কিনীরা এখন অনেক বেশি বিভক্ত, উশৃঙ্খল বলেই মনে হচ্ছে।