ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে খুশি তালেবান, উদ্বিগ্ন জার্মানি-ন্যাটো

দীর্ঘ আলোচনার পর আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে সম্প্রতি একটি শান্তিচুক্তি সই করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে জানুয়ারি নাগাদ দেশটিতে থাকা অর্ধেক সেনা প্রত্যাহার করছে ওয়াশিংটন। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্পের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে তালেবান। তবে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জোট মিত্র জার্মানি ও ন্যাটো।

মার্কিন ও তালেবান প্রতিনিধিরা

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, চুক্তি বাস্তবায়নে সেনা প্রত্যাহারের আদেশ দেয়ায় ট্রাম্পের প্রতি খুশি হয়েছে তালেবান, তাদের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল এটি। বিষয়টি বেশ ঘটা করেই প্রকাশ করেছে আফগান তালেবানরা।

তাদের মুখপাত্র এএফপিকে জানান, আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনারা যত তাড়াতাড়ি চলে যাবে, তত দ্রুত যুদ্ধ শেষ হবে। এ জন্যই ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত উভয় দেশের জন্যই ভালো।

ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে ২ হাজার সেনা সরানোর পরেও ২ হাজার ৫০০ সেনা থাকবে। মার্কিন সব সেনা প্রত্যাহার করা হলে ন্যাটোভুক্ত ৩০টি দেশ তাদের ১২ হাজার সেনাকে দেশে ফিরিয়ে নেবে।

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা

এ কারণেই ট্রাম্পের সেনা সরানোর সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাটের অন্যতম মিত্র জার্মানি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলছেন, এর ফলে তালেবানের সঙ্গে আফগান সরকারের চলমান শান্তি আলোচনা ব্যাহত হবে।

কয়েক দশক পর আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীর এ দুই পক্ষ গঠনমূলক আলোচনায় বসছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশটিতে সংঘাত বন্ধে এটিকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এ শান্তি আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় এখনই সেনা সরালে প্রক্রিয়াটিতে বাধা আসবে।

আফগানিস্তানে ১ হাজার ৩০০ জার্মান সেনা মোতায়েন রয়েছে। এসব সেনা প্রত্যাহার করা না করার বিষয়ে গভীরভাবে ভাবা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী হাইকো। এ ক্ষেত্রে দেশটির সর্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা এবং সেনাদের নিরাপত্তার বিষয় গুরুত্ব দেয়া হবে।

জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

আগে থেকেই মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাটো। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে আফগানিস্তানে থাকা অন্যান্য বিদেশি সেনাদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করে সংস্থাটি।

এদিকে, শান্তিচুক্তি বহাল রাখতে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তালেবান। নির্বাচনের পর গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। কাতারের রাজধানী দোহায় কয়েক দফা আলোচনার পর চুক্তিটি সই হয়। আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনেও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেন তিনি।