আপনি পড়ছেন

গত বছরের ডিসেম্বরে তুরস্ক থেকে সৌদি আরবের পণ্য আমদানির পরিমাণ অন্তত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। বুধবার সৌদি সরকারি হিসাব থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তুর্কি পণ্যের ওপর সৌদি ব্যবসায়ী ও খুচরা ক্রেতাদের অনানুষ্ঠানিক বয়কটের প্রভাবে এমনটি ঘটেছে বলে ডেইলি সাবাহ-এর বুধবারের খবরে বলা হয়।

turkey saudi business lowestসৌদি-তুরস্ক ভয়াবহ বাণিজ্য সম্পর্ক

ডিসেম্বরে তুরস্ক থেকে আমদানি হয়েছে মাত্র ৫০ দশমিক ৬ মিলিয়ন রিয়ালের পণ্য। নভেম্বরে এ পরিমাণ ছিল ১৮২ দশমিক ২ মিলিয়ন রিয়াল। সৌদি আরবের ‘জেনারেল অথরিটি ফর স্ট্যাটিস্টিকস’-এর তথ্যমতে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন রিয়ালের তুর্কি পণ্য আমদানি করেছিল সৌদি আরব।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, মুসলিম বিশ্বের দুই প্রধান শক্তির রাজনৈতিক রেষারেষির ধাক্কা এখন তাদের বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর ভয়াবহভাবে আছড়ে পড়ছে। এটা স্পষ্ট যে, সৌদি আরব তুরস্কের এরদোয়ান সরকারকে শায়েস্তা করার উপায় হিসেবে বাজার বন্ধের কৌশল নিয়েছে।

যদিও মিডিয়ার প্রশ্নের মুখে সৌদি সরকার এখনও বলে যাচ্ছে, তুরস্ক থেকে পণ্য আমদানির ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক ও তুরস্কের ব্যবসায়ীমহল অবশ্য নিশ্চিত যে, তুর্কি পণ্য বয়কটের যে ক্যাম্পেইন দ্রুত সৌদি আরবে ছড়িয়ে পড়েছে, তার পেছনে রয়েছে দেশটির সরকার।

সৌদি সরকারের ইচ্ছাতেই যে এ বয়কট ক্যাম্পেইন চলছে, তার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যখন সৌদি খাদ্য এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ তুরস্ক থেকে সব ধরনের মাংস, মাছ, ডিম এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানায়।

ডেইলি সাবাহ এবং আরও কিছু মিডিয়া জানিয়েছে, তুর্কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সৌদির এ সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে দেশের রপ্তানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

প্রকাশ্যে এ ‘তুরস্ক বয়কট’ প্রচারাভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে সৌদি আরবের শীর্ষ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সমিতি ‘রিয়াদ চেম্বার অব কমার্স’।

turkey saudi business lowest innerসৌদি-তুরস্ক ভয়াবহ বাণিজ্য সম্পর্ক

সমিতির প্রধান আজলান আল-আজলান অক্টোবরের মাঝামাঝি এক বিবৃতিতে ‘সৌদি নেতৃত্ব, দেশ ও সৌদি জনগণের বিরুদ্ধে অব্যাহত বৈরি আচরণের’ প্রতিবাদে তুরস্কের তৈরি পণ্য বর্জনের ডাক দেন।

ওই বিবৃতির মূল বার্তা ছিল, তুরস্কে কোনো বিনিয়োগ নয়, তুরস্ক থেকে কোনো আমদানি নয় এবং তুরস্কে কোনো পর্যটন নয়।

রিয়াদ থেকে সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সৌদি চেইন সুপারমার্কেটগুলো একে একে বয়কটের এ ডাকে সাড়া দিয়েছে।

সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় সুপারমার্কেট আথায়াম ছাড়াও দানিউব, তামিমি এবং পাণ্ডা চেইন শপ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা তুরস্কে তৈরি কোনো পণ্য বিক্রি করবে না।

সরকারপন্থী সৌদি বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীরা গণমাধ্যমে এ বয়কটের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে জনমত তৈরির চেষ্টা করছেন।

আরব নিউজ পত্রিকায় সুপরিচিত সৌদি রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক ড. হামদান আলসেহরি বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তুরস্কের মাথা গলানোর কারণেই এ বয়কট।’

২০১১ সালে তথাকথিত আরব বসন্তের প্রতি তুরস্কের অকুণ্ঠ সমর্থনের পর থেকে রিয়াদ-আঙ্কারার সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। এরপর ২০১৭ সালে সৌদি আরব এবং তার মিত্ররা যখন কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তখন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান কাতারের সমর্থনে এগিয়ে আসেন।

এরপর ২০১৮ সালে ইস্তান্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের মধ্যে সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যেভাবে সৌদি রাজপরিবারকে দায়ী করেছেন, তাতে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.