কাশ্মিরে ভারতের পদক্ষেপে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

জাতিসংঘ বলেছে, ভারত-শাসিত কাশ্মিরে মানবাধিকারের পক্ষের শক্তির ওপর সরকারি অভিযান নাগরিক সমাজের জীবনযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির নামান্তর। এ ধরনের পদক্ষেপ জনগণের তথ্য আদান-প্রদানের অধিকারকে খর্ব করে। এর মাধ্যমে সরকারি দমননীতির কারণে জনগণের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে কথা বলার অধিকারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। মানবাধিকার-বিষয়ক জাতিসংঘ হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

কার্যত অচল কাশ্মির

ব্যাচেলেট বলেন, কাশ্মিরে নাগরিক সমাজের কর্মীদের যোগাযোগের ওপর সরকারি বিধিনিষেধ এবং দমনাভিযান উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মোবাইলে ফোরজির অ্যাকসেস ফিরে এলেও নাগরিকসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। ব্যবসা, জীবনযাত্রা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা-তথ্যে প্রবেশ অবরুদ্ধ রয়েছে।

২০১৯ সালের ৪ আগস্ট থেকে বন্ধ থাকার পর গত ৬ ফেব্রুয়ারি সেখানে উচ্চগতির ইন্টারনেট চালু হয়। স্বাধীনতাকামী হাজার হাজার কর্মীকে গ্রেপ্তার ছাড়াও সামরিক অভিযানে স্থবির ছিল কাশ্মির। যোগাযোগব্যবস্থাও কার্যত অচল করে দিয়েছিল সরকার।

গত অক্টোবরে সেখানে অস্বাভাবিক তল্লাশি অভিযানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, এ ধরনের সরকারি তৎপরতা উদ্বেগজনক। মনে হচ্ছে, ভারতের সরকার জম্মু-কাশ্মিরের সব বিরোধী কণ্ঠকে দমনে বদ্ধপরিকর।

মানবাধিকার-বিষয়ক জাতিসংঘ হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের ৭ জন র‌্যাপোর্টিয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, ২০১৯ সালে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর নতুন আবাসিক আইন প্রবর্তনের ফলে সেখানে মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ কমে যাবে।

কাশ্মির-বিষয়ক পাকিস্তান পার্লামেন্টারি কমিটির প্রধান শাহরিয়ার খান আফ্রিদি শুক্রবার জাতিসংঘ র‌্যাপোর্টিয়ারদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জাতিসংঘকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জম্মু-কাশ্মিরে জনতাত্ত্বিক সন্ত্রাসের জন্য জাতিংঘের উচিত ভারতের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করা।

এক সেমিনারে আফ্রিদি জানান, শীর্ষ মানবাধিকার গ্রুপগুলো কাশ্মিরে বিরোধীকণ্ঠ দমন এখনই বন্ধ করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ভারত সরকার এ আহ্বানের তোয়াক্কা করছে না।