আপনি পড়ছেন

আমেরিকান সেনারা ২০০৩ সালের ৯ এপ্রিল বাগদাদের দখল নেয়। এরপর ১৮ বছর কেটে গেছে। নাসিরিয়ার বাড়িতে দোলনায় থাকা হুসেইন এখন ২১ বছরে পা দিয়েছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ার সুবাদে চোখে না দেখলেও তিনি এখন সাদ্দাম হুসেইনের রক্তাক্ত ওই শাসনের কথা মানুষকে মনে করিয়ে দিতে পারেন।

saddam hussain dictator iraqস্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেন

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, স্বৈরশাসক সাদ্দামের পতনের পর ইরাক ১৮ বছর পার করেছে। কিন্তু হুসেইনের মতো যারা তার বর্বর শাসন পাননি, তারা এখন সাক্ষী দেশটির নিরাপত্তাহীনতা, যত্রতত্র দুর্নীতি ও বেকারত্বের। আমেরিকা সাদ্দামের গলায় শিকল পরিয়ে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এতদিনেও পরিস্থিতির খুব একটা হেরফের হয়নি।

হুসেইন মনে করেন, ১৯৯০ সালে ইরাকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অনেক নাগরিকের প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতির কারণ। এখন তাদের কারণেই ইরাকে অযোগ্য রাজনৈতিক দল ও পঁচা পদ্ধতি স্থায়ী হয়েছে। এক কথায় অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে ইরাক, আক্ষেপ করেন হুসেইন।

শিক্ষিত বেকার বাড়লেও চাকরির সুযোগ বলতে গেলে শূন্য। ২০১৪ সালে এখানে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের পতন হয়েছে। এরপরই গেড়ে বসেছে দুর্নীতি, নষ্ট আমলাতন্ত্র। তবে তরুণ সমাজ মনে করে, ইরাকের সম্পদ বিশেষ করে তেল সম্পদকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত বদলানো সম্ভব।

hussain rawan iraq saddamহুসেইন ও রাওয়ান

হুসেইনের মতোই শিয়াদের পবিত্র শহর কারবালার বাসিন্দা ২১ বছর বয়সী ইব্রাহিম দেশটিতে তার ভবিষ্যত অনিশ্চিত মনে করেন, ‘এদেশে গরিবের পক্ষে বাস করা সম্ভব নয়। অনেক স্বপ্ন নিয়ে মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেই। কিন্তু আর্থিক কারণে মাঝপথেই তা বাদ দিতে বাধ্য হয়েছি।’

হুসেইন এবং ইব্রাহিম তাদের ১৩ বছর বয়স থেকেই পরিবারের জীবিকার তাগিদে ‘ওড জব’ করছেন। ইউনিসেফ বলছে, ইরাকের ৩৭ শতাংশ শিশু বৈশ্বিক চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।

হুসেইনের ছোট ভাইও একই কাজ করছে। দুজন মিলে সাত সদস্যের পরিবারের ঘানি টানছেন। শিগগিরই হুসেইন পরিবারের প্রথম স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করবেন। কিন্তু এরপরের জীবন ভাবলে তিনি খুব একটা আশা দেখেন না। কারণ প্রত্যেক বছর দেশটি থেকে সরকারি চাকরির জন্য ৭ লাখ স্নাতক পাস করছে। প্রাইভেট সেক্টরে চাকরির সুযোগ আরও কম। যেটি হুসেইনের কথায় স্পষ্ট, ‘আপনি কেবল তখনই একটি বেসরকারি চাকরি পাবেন, যখন আপনি রাজনীতি করবেন অথবা জঙ্গিগোষ্ঠীতে যুক্ত হবেন।’

regime change movement iraqসরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে তরুণদের আন্দোলন

ইরাকে ৪ কোটি জনগণের ৬০ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের নিচে এবং এদের বেকারত্বের হার ৩৬ শতাংশ। এর ফলে চাকরি পেতেই অনেকে মোটা বেতনে সশস্ত্র গ্রুপে যোগ দেন। এমনকি সরকারও তার তেল খাতের রাজস্ব আদায়ে এদের ওপর নির্ভরশীল। এমন প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি, বেকারত্ব ও অযোগ্য নেতৃত্ব বদলাতে ২০১৯ সালের অক্টোবরে তরুণ সমাজ রাস্তায় নামলে ৬ শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এখনো তালিকা ধরে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্র। সে আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেকে দেশ ছেড়েছেন। তবে আশার প্রতীক হয়ে আছেন রাওয়ানের মতো অনেকে।

এ তরুণী মনে করেন, প্রযুক্তির কারণে তাদের প্রজন্ম আলাদা। বাইরের সাথে দেশীয় জীবন তুলনা করতে পারে। ফলে অব্যাহত হুমকি এবং নানা সংকটের মধ্যেও স্বপ্ন দেখছেন ক্ষমতা পরিবর্তনের, ‘এটি এতটা সহজ নয়। কিন্তু এটাও সত্য এদেশের ভবিষ্যত আমাদের প্রজন্মের হাতেই।’

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.