তুরস্কে এসে নথি দেখে যান, বাইডেনকে এরদোয়ান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১৯১৫ সালে সংঘটিত আর্মেনীয় হত্যাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর মার্কিন কর্তৃপক্ষকে তুরস্কে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।

মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন এরদোয়ান

এরদোয়ান বলেন, ‘আমি মার্কিন কর্তৃপক্ষকে তুরস্কে এসে ১৯১৫ সাল প্রসঙ্গে আমাদের প্রমাণাদি পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানাই। আমি জো বাইডেনের মতো ঢালাওভাবে কথা বলছি না, আমি বলছি তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে। আমাদের আর্কাইভে এ ঘটনা নিয়ে দশ লাখেরও বেশি নথি রয়েছে।’

এ সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনার হাতে এ নিয়ে কয়টা নথি আছে?’

সোমবার রাতে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এ ভুল পদক্ষেপ আমাদের সম্পর্কে বাধা তৈরি করবে। তুরস্ক যেখানে আর্মেনিয়ার সঙ্গে ভালো প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে যাচ্ছে, সেখানে এ পদক্ষেপ বড় ভুল ছাড়া আর কিছু নয়।’

এরদোয়ান বলেন, ‘আর্মেনিয়া থেকে দেড় লাখ থেকে তিন লাখ লোক এসে তুর্কি অঞ্চলে নির্বিচার হত্যা চালিয়েছিল। তাছাড়া, তারা আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাশিয়ার অংশীদার হয়েছিল। অটোমান কর্তৃপক্ষ তখন পূর্বসতর্কতা অবলম্বন করে।’

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এ সময় আর্মেনীয়দের হাতে সংঘটিত জঘন্য অপরাধগুলো তুলে ধরেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান

এরদোয়ান আবারও একটি যৌথ ইতিহাস কমিশন গঠনের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তুরস্কের অবস্থানে কোনো বদল হয়নি। ১৯১৫ সালের ঘটনাবলি নিয়ে ইতিহাসবিদরাই সিদ্ধান্ত দেবেন, রাজনীতিবিদরা নন। আমরা আমাদের আর্কাইভগুলো খোলা রাখার গ্যারান্টি দিয়েছি বারবার, কিন্তু যৌথ ইতিহাস কমিশন গঠনে আমাদের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’

সম্প্রতি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যে আর্মেনীয়দের হত্যাকে ‘গণহত্যা’ বলে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এর পর থেকে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। তিনি বাইডেনের এ স্বীকৃতিকে ‘ভিত্তিহীন, অশোভন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর’ বলেও অভিহিত করেন।

এরদোয়ান বলেন, উগ্রবাদী আমেরিকান সংগঠন এবং তুর্কিবিরোধী চক্রের চাপের কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাইডেন। এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানান এরদোয়ান।