টিকা কূটনীতিতে ভারতকে পেছনে ফেললো চীন!

ভয়াবহ সংকটের মুখে থাকা দক্ষিণ এশিয়ায় করোনার টিকা নিয়ে চলমান কূটনীতিতে প্রায় একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে চীন। এর বিপরীতে এই অঞ্চলের আরেক প্রতিদ্বিন্দ্বী ভারত শুরুতে এগুলেও এখন অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে।

ভারত ও চীনের পতাকা

প্রায় ২০০ কোটি জনসংখ্যার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে করোনায় সবচেয়ে সংকটে রয়েছে বিপর্যস্ত ভারত। দেশটির প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ভাইরাসটির সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর বিপরীতে টিকাদান কর্মসূচি সেভাবে এগুচ্ছে না।

অন্যদিকে, করোনার উৎপত্তি চীনে হলেও তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হওয়ায় অনেক আগেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে দেশটি। ফলে টিকা নিয়ে পরিকল্পিত কূটনীতি জোরদার করে বেইজিং, যার সুফল পাচ্ছে এখন তারা।

দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার প্রতিরোধক টিকার ব্যাপক চাহিদাকে কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে চীন ও ভারত। এ ক্ষেত্রে দেশ দুটির মধ্যে শুরু থেকেই রীতিমতো তীব্র প্রতিযোগিতা চলে আসছে।

বার্তা সংস্থা এপি জানায়, টিকা রপ্তানিতে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী দেশ ভারত। দেশটি এরইমধ্যে দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেছে।

এসব দেশে প্রথমে উপহার হিসেবে এবং পরে চুক্তির টিকা পাঠানো শুরু করে দিল্লি। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের সুনামিতে বিপর্যন্ত দেশটি এখন সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

ভারতে টিকাদান কর্মসূচি, ফাইল ছবি

‘টিকা রপ্তানি ফের শুরু করার বিষয়ে আশাবাদী ভারত’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ধীরগতিতে ও ভুলভাবে টিকাদানের জন্য ভারতকে দায়ী করছেন সমালোচকরা।

অন্যদিকে, দেশটির নিকট প্রতিবেশী নেপাল, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মতো দেশগুলো চুক্তি অনুযায়ী টিকা না পাওয়ায় ঘাটতির মুখে পড়েছে। টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে সেই শূন্যতা পূরণে চীনমুখী হতে শুরু করেছে দেশগুলো।

এ ক্ষেত্রে চীনও দু’হাত প্রসারিত করে প্রথমে লাখ লাখ ডোজ টিকা উপহার এবং পরে চুক্তি করে টিকা সরবরাহের পথে হাঁটছে। বাংলাদেশকে এরইমধ্যে দুই দফায় ১১ লাখ ডোজ এবং নেপালকে ৮ লাখ ডোজ উপহার দিয়েছে বেইজিং। এ ছাড়া ঢাকা দেড় কোটি ডোজ এবং কাঠমান্ডু প্রায় ১০ লাখ ডোজ টিকা কিনছে, যা শিগগিরই সরবরাহের আশা করা হচ্ছে।

চীনের সিনোভ্যাকের টিকা, ফাইল ছবি

এর বাইরে শ্রীলঙ্কায় উপহার হিসেবে ১১ লাখ ডোজ দিয়েছে চীন, আরো ১ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা কেনার চুক্তি হচ্ছে। পাকিস্তান কয়েক দফায় ২১ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পেয়েছে চীন থেকে।

অথচ বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকে শুরুর দিকে কয়েক লাখ করে টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছিল ভারত। তা দিয়ে দেশগুলো টিকাদান কর্মসূচি শুরু করলেও পরে টিকা না আসায় তা থমকে যায়। যা টিকা কূটনীতিতে এগিয়ে দিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে।