পরীক্ষার নাম্বার বাড়াতে নয়, কমাতে আবেদন স্কুলের

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফল। তাতে নিজেদের নম্বর বাড়ানোর দাবি তুলে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ করছেন অনেকে। অনেকে আবার ফেলের তালিকা থেকে পাসের তালিকায় নিজেদের নাম তোলার জন্য বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

পুরুলিয়ার নলহাটি হাইস্কুল

এরই মধ্যে পুরুলিয়ার নলহাটির একটি স্কুলে দেখা মিলল উল্টো এক চিত্র। তাদের এক ছাত্রী যে নাম্বার পেয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট নয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাই তারা কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ছাত্রীর নাম্বার যাচাই করে সংশোধনের আবেদন জানিয়েছে।

জানা গেছে, ওই স্কুলে এক মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রীর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৫১। কিন্তু তার এতো নাম্বার পাওয়া নিয়ে সন্দিহান স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, ওই ছাত্রী মাধ্যমিকে এত নম্বর পাওয়ার যোগ্য নয়। ফলে তারা মাধ্যমিক পরীক্ষার পর্ষদকে নাম্বার সংশোধনের আর্জি জানানো হয়েছে।

পরীক্ষা না নিয়ে ফেল করানোয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ভোগান্তির কবলে পড়া ছাত্রীটির নাম অনন্যা মণ্ডল। নলহাটি হাইস্কুল ফর গার্লস স্কুলের এই ছাত্রী জানায়, মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে এক সপ্তাহ আগে গত ২০ জুলাই। কিন্তু সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও মার্কশিট হাতে পাননি তিনি। মার্কশিটের জন্য স্কুলে গেলে তাকে ও পরিবারকে তাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা বিদিশা সিনহা। সে জানায়, মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণার পর অনলাইনে দেখি আমার প্রাপ্ত নম্বর ৬৫১। অথচ রেজাল্ট আনতে গেলে মার্কশিট দিতে অস্বীকার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

নলহাটি হাইস্কুল ফর গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিদিশা সিনহা বলেন, অনন্যা যা নম্বর পেয়েছে, তা পাওয়ার কথা নয়। তাই মার্কশিট তার হাতে দেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, অনন্যা কোনোভাবেই ওই নাম্বার পাওয়ার যোগ্য নয়। ভুল করেই তার ৬৫১ নম্বর চলে এসেছে। তাই এ ফল আবারো পর্ষদে পাঠানো হবে। এক মাস পরে নম্বর সংশোধন করে তার পর মার্কশিট দেওয়া হবে।

এদিকে মার্কশিট হাতে না পাওয়ায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার জন্য কোথাও আবেদন করতে পারছেন না অনন্যা। তা ছাড়া এই প্রাপ্ত নম্বর পাড়া প্রতিবেশী-আত্মীয়স্বজনকে এরই মধ্যে দেখিয়ে বিড়ম্বনার শিকারও হতে হয়েছে বলে দাবি করছে অনন্যার পরিবার।

অনন্যার মা নিরুপমা দেবী আশঙ্কা করছেন, মাধ্যমিকের প্রাপ্ত নম্বর না দিলে মেয়ে হয়তো অপমানিত হয়ে কিছু একটা করেও ফেলতে পারে। এরকম কিছু হলে তার জন্য দায়ী থাকবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষিকা ইচ্ছে করেই আমার মেয়ের মার্কশিট দিচ্ছেন না। এমনকি স্কুলে ঢুকলে তিনি অনন্যাসহ আমাদেরকে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। বিষয়টি জেলাশাসককে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি।

কিন্তু প্রধান শিক্ষিকার পাল্টা দাবি করেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে পুরো রাজ্য জুড়েই। অনন্যার সমস্যাটি ছাড়াও স্কুলের অন্য দু’জনের নম্বর কম এসেছে। তারা এত কম নম্বর পাওয়ার মতো ছাত্রী নয়। তাই আমি তিনজনের ফলই যাচাইয়ের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। এখন সেখানে যা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সেই মতোই ব্যবস্থা নেয়া হবে।