৮২ মাইলজুড়ে ভয়াবহ দাবানল

ক্যালিফোর্নিয়ায় বনাঞ্চলের ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। আবহাওয়া প্রচণ্ড গরম থাকায় এ দাবানল আরও বেশি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাবানালের ফলে ওই এলাকার আকাশে মেঘ তৈরি হচ্ছে, আর ঝড়ো বাতাসে বজ্রপাতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগুনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ৮২ মাইলজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ৫৪০০ কর্মী আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত রয়েছে। সোমবার পর্যন্ত মাত্র ২২ শতাংশ এলাকা থেকে আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। দ্য ডন।

সরকারি আবহাওয়বিদ জুলিয়া রুথফোর্ড বলছেন, যদি মেঘের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়, তাহলে বজ্রপাতের হারও বেড়ে যাবে।

উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় বনে আগুনের সূত্রপাত হয় জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে। আবহাওয়া প্রচণ্ড গরম হওয়ায় এলাকাটি খরাপ্রবণ এলাকায় পরিণত হচ্ছে। সপ্তাহজুড়ে দাবানল অব্যাহত থাকায় বাড়িঘর থেকে নিরাপদে সরে যাচ্ছেন স্থানীয়রা। এ অঞ্চলে দাবানল সাধারণ ঘটনা হলেও এই গ্রীষ্মে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

এ বছরের দাবানলে ইতোমধ্যে আগের বছরের চেয়ে তিনগুন ফসলক্ষেত ধ্বংস হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে যা ব্যতিক্রম ঘটনা। ফ্লোরিডা থেকেও উদ্ধারকর্মীদের নিয়ে আসা হয়েছে। এতো নির্বাপণ তৎপরতার পরও আগুন ছড়িয়ে গেছে অন্তত ৮২ মাইল জুড়ে। জ্বালিয়ে দিয়েছে এক লাখ ৯৭ হাজার ৪৮৭ একর ভূমি।

দাবানলের এলাকা প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় হতাহতের খবর কম। শত শত বাড়িঘর, গাড়ি এবং কিছু ছোট ভবন পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ট্রেন থেকেও পানি ছুড়ছে।

ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র রিক চারহার্ট বলছেন, আগুন নেভাতে কর্মীদের দ্রুত মাইলের পর মাইল পাড়ি দিতে হচ্ছে। যারা বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে, তাদের আশ্রয়কেন্দ্রও আগুনের হুমকির মধ্যে পড়েছে। ফায়ার কর্মীরা অত্যন্ত কষ্ট করে তাদের যন্ত্রপাতি বহন করছে। আগুনের তাণ্ডব অত্যন্ত নির্মম। সবকিছু পুড়িয়ে দিচ্ছে দাবানল। পুড়ে যাওয়া এলাকার মাটিতে আগুনের মতো তাপ।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া এবং ওরেগন প্রদেশে দাবানল আবহাওয়া পরিবর্তন করে দিচ্ছে। অঞ্চলের পর অঞ্চল জুড়ে দেখা দিচ্ছে খরা। গাছপালা ফসল সবই খরার কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘাস হলুদ হয়ে যাচ্ছে। লেকের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে নানা স্থানে দাবানল সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে শুকনো গাছ প্যাসিফিক অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানির বিদ্যুৎলাইনে পড়ে সৃষ্ট দাবানলে ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।