আফগান ইস্যুতে অবস্থান পরিষ্কার করলো পাকিস্তান

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার (২ আগস্ট) আবারো পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, আফগানিস্তানে বিশেষ কোনো পছন্দ নেই ইসলামাবাদের। দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির একটি বক্তব্যকে ঘিরে প্রশ্ন উঠার প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে জানায়, আইএস ও তালেবানকে ঘিরে তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি

গত শনিবার মুলতানে এক সংবাদ সম্মেলনের সময় পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আইএস যোদ্ধাদের আফগানিস্তানে প্রবেশ করার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, যদি তারা (আইএস) ইরাক বা সিরিয়া থেকে আফগানিস্তানে চলে আসে, তাহলে তাদের চেক করার দায়িত্ব কার? আফগান সরকারের। তাদের ওপর নজর রাখা বা পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব কার? আফগান শাসক ও সরকারের। আমি আশা করি, তারা তাদের দায়িত্বে অবহেলা করবে না।

ওই সময় তিনি আরো বলেছিলেন, আফগান সরকার বা তালেবান, আফগানিস্তানের প্রতিবেশী বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেউই আইএসের পুনরুত্থান চায়নি। এই বিষয়ে সকলের ঐকমত্য রয়েছে। এখন তাদের একটি দায়িত্ব আছে এবং তাদের তা পালন করা উচিত।

পাকিস্তান-আফগানিস্তানের একটি সীমান্ত, ফাইল ছবি

তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং আফগান সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, কুরেশির বক্তব্যে মনে হয়েছে তিনি পরিস্থিতি সামলাতে আফগান সরকার নয়, তালেবানকেই আশা করেছিলেন।

এ পরিস্থিতিতে এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কুরেশির বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তার বক্তব্য ছিল কেবল আফগানিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার্থে দেশটির নিজস্ব শান্তি প্রক্রিয়ার ব্যাপারেই।

বিবৃতিতে পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী বলেন, আমরা বারবার বলেছি, আফগানিস্তানে ইসলামাবাদের কোনো পছন্দ নেই। তাদের সিদ্ধান্ত তাদের নিজেদেরই নিতে হবে। আমরা কেবল আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত রাখব। আফগানিস্তানের এখন অন্তর্ভুক্তিমূলক, বিস্তৃত ও ব্যাপক রাজনৈতিক সমঝোতার পথ খোঁজার জন্য সমস্ত শক্তি ব্যয় করা উচিত।

পাকিস্তান বেশ কিছুদিন ধরে বারবারই আফগানিস্তানে কোনো পক্ষ নেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। গত জুন মাসে ইসলামাবাদে পাক-আফগান দ্বিপাক্ষিক সংলাপের উদ্বোধনী অধিবেশনে কুরেশি বলেছিলেন, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার জন্য স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। সেখানে আমাদের পছন্দে কেউ নেই। সাধারণ একটি ধারণা রয়েছে যে, আমরা তালেবানের পক্ষে। কিন্তু আমি তা নই এবং আমি তাদের প্রতিনিধিত্ব করি না। আমি পাকিস্তানের প্রতিনিধি। পাকিস্তানকেই উপস্থাপন করি।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও সম্প্রতি বলেছেন, পাকিস্তান তালেবানের কোনো কাজের জন্য দায়ী নয় এবং তাদের মুখপাত্রের ভূমিকাও পালন করে না।

রাশিয়া গত সপ্তাহে সতর্ক করে জানিয়েছিল, আইএস যোদ্ধারা দ্রুত অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির মধ্যে আফগানিস্তানে প্রবেশ করছে। সিরিয়া, লিবিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে তারা আফগানিস্তানে ঢুকছে।