অথচ কাবুল ছাড়তে চান না তুর্কি নারী

আগস্টের ১৫ তারিখে তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণে নিলে বিদেশিরা নিজ দেশে ফিরে যেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। যে ভাবেই হোক না কেন, আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়াটাই ছিলো তাদের কাছে মূখ্য বিষয়। কিন্তু তুর্কি এক নারী তখন চলেছেন স্রোতের বিপরীতে। স্বজনদের অনেক অনুরোধের পরও তিনি কাবুল ছেড়ে যাননি। বলেন, আমি অনেক নিরাপদে আছি, ভালো আছি।

নিজ বাগানে তুর্কি নারী ফাতেমা

ফাতেমা নামের ওই তুর্কি নারী এখন থাকেন কাবুলের নিকটবর্তী কোলোলা পোস্ত এলাকায়। ৫২ বছর বয়সী এই নারী গত নয় বছর ধরে আফগানিস্তানে অবস্থান করছেন। কাবুলে আসার আগে তিনি মাজাই-ই-শরীফে বেশ কিছুদিন বাস করেন। তিনি বলেন, আমি আফগানিস্তান ও এর জনগণকে ভালোবেসে ফেলেছি।

সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানে যে সংঘর্ষ চলেছে সে ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি কোনো নিরাপত্তা সমস্যার মুখে পড়িনি। তাই সবচেয়ে তীব্র হামলার সময়েও আমি এ দেশ ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবিনি।

পরিবারের কেউ সাথে না থাকলেও কাবুল ছেড়ে যেতে চান না ফাতেমা

নিজের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, আফগানিস্তানে এসে ব্যবসা শুরু করেছেন এমন বন্ধুদের ডাকে তিনি ২০১২ সালে আফগানিস্তানে আসেন। এখানে এসে তিনি বিউটিশিয়ানের কাজ শুরু করেন। কয়েকবার তার ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু তারপরও তিনি তার ব্যবসা চালু রাখেন। কাবুলে আসার পরও তিনি কাজ করছেন। তার সাথে এখন ১১ জন কর্মী কাজ করছেন।

তুরস্কে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান, তার আত্মীয়তা তাকে দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে খুব চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ফাতেমা আফগানিস্তানকেই ভালবেসে ফেলেছেন। তুর্কি হওয়ায় তাকে আফগানরা খুব সাহায্য করে। কাবুলেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। দীর্ঘদিন অবস্থান করতে করতে তিনি তার প্রতিবেশী, গ্রাহক ও বন্ধুদের সাথে হৃদিক বন্ধন গড়ে তুলেছেন।

তিনি জানান, কয়েকদিনের মধ্যে দুবার তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। প্রথমত কোভিডের কারণে গত বছর ৫ মাস তার ব্যবসা বন্ধ থাকে। আর এ বছর তালেবান সরকার আসার পর ১৫ দিন তার  ব্যবসা বন্ধ ছিল। তারপরও তিনি আশা প্রকাশ করেন, আমি নিশ্চিত আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি ভালো হবে। এ সময় তিনি তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপের কথা অস্বীকার করেন।

সূত্র: আনাদোলু