চীনকে ঠেকাতে বিকল্প মহাপরিকল্পনা নিয়ে নামছে ইইউ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন থেকে চলা একমুখী বিশ্ব ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে নানা কৌশল নিয়ে এগুচ্ছে উদীয়মান পরাশক্তি চীন। দেশটির বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, বিআরআইকে বিশ্বে নিজস্ব বিশাল বলয় তৈরির চেষ্টা হিসেবে দেখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইইউসহ পশ্চিমারা। ফলে বেইজিংয়ের এই ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা আটকাতে বিকল্প হিসেবে বিশাল বৈশ্বিক বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে ইইউ।

ইইউ ও চীনের পতাকা

৩০০ বিলিয়ন ইউরো বা ৩৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের এই মহাপরিকল্পনাকে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে স্কিম’ নাম দেয়া হয়েছে। এটিকে ‘প্রকৃত পক্ষেই বিআরআই’র বিকল্প করা হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন। গতকাল বুধবার, ১ ডিসেম্বর, এই পরিকল্পনার বিস্তারিত প্রকাশ করেন তিনি।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ২০২৭ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী অবকাঠামো, ডিজিটাল ও জলবায়ু প্রকল্পে বিশাল আকারের এই বিনিয়োগ ব্যয় করা হবে। ইইউ সদস্য দেশগুলোর যোগান দেয়া অর্থের এই পরিকল্পনাকে ‘বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড’ হিসেবে গড়ে তোলার আশা করছেন উরসুলা ভন ডার লিয়েন।

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, বিআরআই

বিশ্বব্যাপী চীনা বিনিয়োগ ‘প্রতিকূল শর্তে’ এবং ‘অস্বচ্ছ উপায়ে’ হয়ে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দরিদ্র দেশগুলোতে এমন বিনিয়োগ করে চলেছে চীন। বিশেষ করে আফ্রিকার কিছু দেশকে ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে নির্ভরশীল করে তুলেছে দেশটি। এর বিপরীতে ইইউয়ের বিনিয়োগে স্থানীয়দের সুবিধাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

এ ছাড়া বেসরকারি খাতকেও যুক্ত করা হবে এই বিনিয়োগ পরিকল্পনায়। এতে বিনিয়োগ কম ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে মনে করেন উরসুলা ভন ডার লিয়েন। তিনি আরো বলেন, দেশগুলো চীনা অফারের চেয়ে অনেক ভালো ও ভিন্ন কিছু পাবে ইইউর কাছে।

২০১৩ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের চালু করা বিআরআই এরইমধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়েছে। এই প্রকল্পে সহায়তা করতে শতাধিক দেশ চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, পাইপলাইনে রয়েছে আরো কিছু দেশ। ইউরোপের নাকের ডগায় পৌঁছে যাওয়া এই প্রকল্পকে কতটা আটকাতে পারবে ইইউ, সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।