পরমাণু সমঝোতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের হতাশা

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় গত ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান এ আলোচনার বিষয়ে খুব বেশি আশাবাদী নয়। এ সমঝোতা আলোচনার মূল লক্ষ্য হল ইরান ও বিশ্বশক্তির মধ্যে স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা। রয়টার্সের বরাত দিয়ে খবরটি দিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন এবং সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলছেন, আমাদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব কথাবার্তা হয়েছে তাতে আমরা আশাবাদী হতে পারছি না। স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মত প্রকাশ করেন। ব্লিঙ্কেন বলছেন, ইরান যদি এক বা তারও বেশি দিনের মধ্যে সমঝোতায় আসতে পারে তাহলে ভিন্ন কথা।

রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্ব শক্তি ও তেহরানের মধ্যে ভেস্তে যাওয়া চুক্তিটি পুনর্বহাল করতে চাওয়ায় ইরান ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার শর্ত দেয়। এর পর ব্লিঙ্কেন এই মন্তব্য করলেন। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি আলোচনায় জড়িত নয় বলে খবরে জানানো হচ্ছে। ব্লিঙ্কেন বলছেন, ইরানের ভোল পাল্টাতে ও শর্ত যুক্ত করতে খুব বেশি দেরি হয়নি।

এদিকে ইরানের মিডিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবুল্লাহিয়ানের বরাত দিয়ে বলেছে, আমরা গুরুতর সংকল্প নিয়ে ভিয়েনায় গিয়েছিলাম। কিন্তু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তিনটি ইউরোপীয় দেশের পক্ষের ইচ্ছা ও অভিপ্রায় সম্পর্কে আমরা আশাবাদী নই। এর আগে বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ব্লিঙ্কেনকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানান।

২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বশক্তির সাথে ইরানের পরমাণু সমঝোতা চুক্তি সম্পন্ন হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে তার দেশকে সরিয়ে নেন। এতে চুক্তিটি ভেস্তে যায়। ইরান শর্ত ভঙ্গ করে পারমাণবিক চুল্লিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে শুরু করে। ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এখন ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে অনেক এগিয়েছে। তাদের দাবি যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিষেধাজ্ঞা না প্রত্যাহার করলে সমঝোতা আলোচনায় বসে কোনো লাভ হবে না। যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতায় আসতে চাইলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।