সার্বিয়ায় পাক দূতাবাসের টুইট নিয়ে তোলপাড়

সার্বিয়ায় পাকিস্তান দূতাবাসের একটি টুইট ভাইরাল হয়েছে। টুইটটি বর্তমান পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধে। টুইটটিতে একটি গানের ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে, তাতে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্দশার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। খবর এনডিটিভি।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, ফাইল ছবি

টুইটে ৫৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে সুর করে গাওয়া হয়, ‘সাবুন মেহেঙ্গা হো যায়ে তো আপ নে লাগানা নাহি আতা/মেহেঙ্গা হো যায়ে তো আপনে খানা নাহি/আপনে ঘাবড়ানা নাহি, আপনে ঘাবড়ানা নাহি...’ প্যারোডি গান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শাসনামলে দেশটির অর্থনৈতিক দুর্দশাকে খোঁচা মেরে গাওয়া হয়েছে গানটি।

গানটির অর্থ দাঁড়ায় সাবানের দাম বেড়েছে তো কী হয়েছে? মাখবেন না। খাবারের দাম বেড়েছে? আপনি খাবেন না! তবু আপনি ঘাবড়াবেন না!...’ দেশের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, সাধারণের আর্থিক দুরবস্থা নিয়ে তুমুল কটাক্ষ করা হয়েছে গানটিতে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, এই গানই টুইটারে পোস্ট করেছে সার্বিয়ার পাক দূতাবাস।

টুইটের দুই ঘণ্টা পরই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দিয়ে দূতাবাসের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে বলে দাবি করে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির দূতাবাসের করা টুইটটিও মুছে ফেলা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তার টুইটবার্তায় দাবি করেন, ‘সার্বিয়ায় পাকিস্তান দূতাবাসের টুইটার, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট হওয়া কোনো বার্তা সার্বিয়া পাকিস্তান দূতাবাসের নয়।’

সার্বিয়ার পাক দূতাবাসের ওই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘মুদ্রাস্ফীতি আগের সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ইমরান খান, আর কতদিন আমরা সরকারি কর্মচারীরা চুপ করে থাকব বলে আপনি আশা করেন? তিন মাস হলো বেতন পাইনি, আর কতদিন আপনার হয়ে কাজ করে যাব? ফি না দিতে পারায় আমাদের সন্তানদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এটাই কি নয়া পাকিস্তান?’ পাক দূতাবাসের এই টুইটার অ্যাকাউন্টটিতে নীল টিক চিহ্ন (ভেরিফাইড) থাকায় প্রমাণিত হয় সেটি ফেক কিংবা জাল অ্যাকাউন্ট ছিল না।

এরপর সেখানে পাক প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লেখা হয়, ‘দুঃখিত ইমরান খান। কিন্তু এ ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না।’ পরে টুইটটি ডিলিট করা হলেও ততক্ষণে অনেকেই স্ক্রিনশট নিয়ে ফেলেছেন। শেয়ারও করেছেন অনেকেই। সেটি শেয়ার করেছেন ভারতের সাবেক মেজর জেনারেল হর্ষ কাকারও।

এই ভিডিও নিয়ে ইতোমধ্যেই হাসির খোরাক হয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। যদিও তার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানে গত তিন বছরের মূল্যস্ফীতি ৭০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। খাদ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। অন্যদিকে ঘি, তেল, চিনি, আটা ও মুরগির দাম পৌঁছেছে রেকর্ড উচ্চতায়।