আপনি পড়ছেন

বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগে দায়ের হয় মামলা। দীর্ঘদিন সেই মামলা চলার পর আদালত অভিযুক্তদের নির্দোষ দাবি করে বেকসুর খালাস দিলেন। কিন্তু জানা গেল, আসামিদের একজন সায়মা ফারহান সাত মাস আগেই বন্দী থাকাবস্থায় মারা গেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের করাচির একটি আদালতে।

courts orderমৃত্যুর পর বেকসুর খালাস দেন আদালত

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, আলেমা সায়মা পবিত্র কোরআন পড়াতেন রুখসার নামে একজনকে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিষপানে তার মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, রুখসারের সম্পত্তি হাতানোর জন্যই সায়মা ও তার বেশ কয়েকজন স্বজন মিলে রুখসারকে হত্যা করেছেন।

এ ব্যাপারে ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় লিয়াকতাবাদ থানায় এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়। পরে সায়মা ফারহান, সায়মার বোন নুসরাত রাজ, ভাই মোহাম্মদ আলী ও জাহিদ আলী এবং ভগ্নিপতি আসমা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ৩০২ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন রুখসারের মা শাহনাজ।

karachi prisonকরাচি কারাগার

তবে সায়মার আত্মীয়-স্বজন অভিযোগ করেন, সায়মার সম্পত্তি দখলের জন্যই পুলিশের সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে রুখসারের স্বজনরা। মামলা চলার এক পর্যায়ে রুখসারের মা মরদেহ উত্তোলনের দাবি জানান। সে অনুযায়ী মরদেহ তুলে ময়নাতদন্ত করার পর দেখা যায়, ইঁদুরের বিষের মতো কীটনাশকে ব্যবহৃত জিঙ্ক ফসফাইডের কারণে রুখসারের মৃত্যু হয়েছে। চূড়ান্ত রায়ে আদালত বলেছেন, বিষ পানে রুখসারের মৃত্যু হলেও সায়মা ও তার পরিবারের সদস্যদের এই অপরাধে জড়ানো যাবে না।

কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। কারণ দেড় বছর বন্দী থাকার পর সায়মা সাত মাস আগেই কিডনিসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে জেলেই মারা যান। জেল কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর রিপোর্টে প্রকাশ করেছে যে, তিনি ক্যান্সারের রোগী ছিলেন।

সায়মার ভাইবোনরা বলেন, আমাদের বোন জেলের ভেতরেই যন্ত্রণায় মারা যায়। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ। তার জন্য আমরা কীই-বা করতে পারতাম? আমরা অসহায় ছিলাম।

মামলায় সায়মাদের পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ আকবর খান এবং তার সহযোগী শেখ সাকিব আহমেদ বলেন, বিচার চলাকালে প্রতিটি শুনানিতে সায়মা আমাদের জিজ্ঞাসা করতেন, উকিল সাহেব! আমরা কবে জামিন পাবো। আইনজীবীরা বলেন, সায়মাকে আমরা আর খুশির সংবাদটি জানাতে পারলাম না। তার আগেই তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।

জানা গেছে, প্রতিবেশী ও বন্ধু রুখসারকে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সায়মার কারাবাস শুরু হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ থেকে। আনুষ্ঠানিকভাবে সায়মার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করা হয় ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১। ওই বিচার চলাকালেই তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। আইনজীবীরা তার চিকিৎসার জন্য বারবার আবেদন করতে থাকলে আদালতের নির্দেশে অবশেষে সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে এরই মধ্যে তার চিকিৎসায় বিলম্ব ঘটে যায়। ১২ জুন ২০২১, সায়মাকে উপযুক্ত হাসপাতালে রেফার করার ব্যর্থতার দায়ে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

কারা মেডিকেল অফিসারের রিপোর্ট অনুসারে, হাসপাতাল থেকে কারাগারে ফিরে আসার পর ১৪ জুন তিনি মারা যান। এ অবস্থাতেই বিচার চলতে থাকে। প্রায় সাত মাস পর বিচারক ১০ জানুয়ারি ২০২২-এ রায় ঘোষণা করেন। সমস্ত অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন আদালত।

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উল্লেখ করেন, প্রসিকিউশন সায়মা ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.