খাবার কেনার টাকা নেই, তাই গায়ে আগুন!

করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। সরকারগুলো বিভিন্ন সফলতার দাবি করলেও অবস্থা আসলেই খারাপ। গতকাল শুক্রবার ভারতে দেখা গেছে তারই এক নজির। এক ব্যক্তি দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বাইরে গিয়ে গায়ে আগুন দেন। এ সময় তিনি দাবি করেন, তার কাছে খাবার কেনার মতো টাকা নেই। তাই তিনি আত্মাহুতি দিচ্ছেন।

গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন রাজভর গুপ্তা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল এক ভিডিও থেকে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বাইরে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি গায়ে আগুন দেয়। পুলিশ গিয়ে তার আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের দাবি, হয়তো কোনো বিষয়ে অশান্তিতে ভুগছিলেন নয়ডার বাসিন্দা রাজভর গুপ্তা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, গায়ে আগুন লাগা এক ব্যক্তি রাস্তায় পড়ে চিৎকার করছেন। দুজন পুলিশ আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। একজন ওই ব্যক্তির শরীরে আগুন না লাগার জন্য পোশাক ছেঁড়ার চেষ্টা করছেন। অপর এক পুলিশ ফোন করছেন অন্যত্র। কিছুক্ষণ পর পুলিশ তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে।

মুহাম্মদ বুয়াজিজির আত্মহনন সূচনা করেছিল আরব বসন্তের

ভিডিও সূত্রে জানা যায়, রাজভর গুপ্তা ওই সময় চিৎকার করে বলছিলেন, তিনি ও তার পরিবার কয়েকদিন ধরেই অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের হাতে খাবার কেনার মতো কোনো পয়সা নেই।

এদিকে রাজভর গুপ্তার শরীর কতটা পুড়ে গেছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে গত ছয় মাসে এ নিয়ে দুবার এমন ঘটনা ঘটল। গত বছরের আগস্টে ২৪ বছর বয়সী এক নারী ও পুরুষ গায়ে আগুন দিয়েছিলেন। সে সময় ওই নারীর অভিযোগ ছিল, তার ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর তিউনিসিয়ার ২৬ বছর বয়সী ফল বিক্রেতা যুবক মুহাম্মদ বুয়াজিজি পুলিশের দুর্নীতি ও অসদাচারণের প্রতিবাদে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। ১৮ দিন মুমূর্ষ অবস্থায় কাটানোর পর ৪ জানুয়ারি মারা যান মোহাম্মদ বুয়াজিজি।

তার মৃত্যুর খবরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে তিউনিসিয়ার তরুণ বিপ্লবীরা। ফলে মাত্র ১০ দিনের মাথায় দেশটির সরকারের পতন ঘটে এবং প্রেসিডেন্ট যয়নুল আবেদিন বেন আলী সৌদি আরবে পালিয়ে যান। কিছুদিনের মধ্যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে। দোর্দণ্ড প্রতাপে থাকা সরকারগুলোর পতন ঘটতে থাকে একের পর এক।