ইউক্রেন সংকট: সাইবার প্রতিরক্ষা জোরদারের নির্দেশ

ইউক্রেনের সংঘাতের সাথে যুক্ত সাইবার আক্রমণগুলো সীমানা ছাড়িয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কার মধ্যে যুক্তরাজ্য নিজ সংস্থাগুলোকে সাইবার প্রতিরক্ষা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে। ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার (এনসিএসসি) এই নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সাইবার নিরাপত্তা এখন গুরুত্বপূর্ণ। কোম্পানিগুলোকে তাই আগেভাগেই সতর্ক থাকতে হবে। বিবিসি।

বরিস জনসন ও জো বাইডেন, মাঝে রাশিয়ার সেনা

এনসিএসসি জানাচ্ছে, এই প্রস্তুতি যুক্তরাজ্যের সংস্থাগুলোর জন্য কোনও নির্দিষ্ট হুমকির বিষয়ে নয়। ইউক্রেনে সাইবার হামলা চলছে। আর তাতে রাশিয়া জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ওই হামলার ঢেউ যুক্তরাজ্যেও লাগতে পারে। তবে সাইবার হামলার বিষয়টিও মস্কো বরাবরাই অস্বীকার করে আসছে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ইউক্রেনীয় পাওয়ার স্টেশনের প্রকৌশলীরা তাদের কম্পিউটারের স্ক্রিনে কার্সারগুলো নিজে থেকে চলতে দেখেছেন। সার্ভারগুলো হ্যাক করা হয় এবং কয়েক হাজার মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

ইউক্রেনে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া

এরপর প্রথমবারের মতো পাওয়ার স্টেশনটি অফলাইনে পরিচালনা শুরু হয়। সেটা সাইবার হামলা ছিল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। হ্যাকাররা সাইটে অনুপ্রবেশ করে তথ্য চুরির চেষ্টায় লিপ্ত। আর তাতে অফলাইন অবকাঠামোতেও ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, যার উপর দৈনন্দিন জীবন নির্ভর করে। এ ঘটনায় রাশিয়াকে দোষারোপ করা হয়।

মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা ম্যান্ডিয়েন্টের রাশিয়ান সাইবার অপারেশনের বিশেষজ্ঞ জন হাল্টকুইস্ট বলেছেন, হামলাটি একটি জটিল অপারেশন ছিল। তারা টেলিফোন লাইনগুলোকেও অকেজো করে দিয়েছিল, যাতে প্রকৌশলীরা ফোন সংযোগ না পায়।

ইউক্রেন বছরের পর বছর ধরে সাইবার হামলার শিকার হয়ে আসছে। রাশিয়া যদি দেশটিতে আক্রমণ করে তবে ট্যাঙ্ক এবং সৈন্যরা এখনও অগ্রভাগে থাকবে। কম্পিউটার দিয়ে কেউ দেশ জয় করতে আসবে না। তবে সাইবার আক্রমণগুলো কঠিন শক্তিকে সমর্থন করতে পারে। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলোকে ব্যাহত করে।

২০১৭ সালের জুনে ইউক্রেনে সাইবার হামলা বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসে। ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করার জন্য ব্যবহৃত সফটওয়্যারের ভিতরে ঢুকে পড়ে হ্যাকাররা। কোম্পানিগুলোকে তখন কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আঘাত করা হয়েছিল। এমনকি তাদের কম্পিউটার আনলক করার জন্য অর্থ প্রদান করতে বাধ্য করেছিল হ্যাকাররা।

মার্কিন কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালের ওই সাইবার হামলার সাথে বর্তমানের হামলার মিল পেয়েছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ব্যাপক সতর্কতা জারি করা হয়েছে।