তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশের স্বীকৃতি আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। প্রত্যেকটি দেশ বা সংস্থা তাদেরকে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে বলেছে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য। এগুলোর মধ্যে নারীদের অধিকার প্রদানের পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের প্রতি জোর দেয়া হয়েছে।
জবিউল্লাহ মুজাহিদ
তালেবান সরকার জানিয়েছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন হলেও গত ২০ বছর যারা দেশ চালিয়েছে কোনোভাবেই এই সরকারে তাদের জায়গা দেয়া হবে না। আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদের বরাত দিয়ে আফগান বার্তা সংস্থা আওয়া এই খবর জানিয়েছে।
গত কয়েক মাসে তালেবান দেশে-বিদেশে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেছে। বৈঠকের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বতর্মান তালেবান প্রশাসনের স্বীকৃতি লাভ। প্রতিটি বৈঠক বিভিন্ন দিক থেকে ফলপ্রসূ হলেও তালেবানের কাঙ্ক্ষিত সেই সফলতা আসেনি। সবাই মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারটিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারে পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে।
বিভিন্ন পক্ষের সাথে বৈঠক করেছে তালেবান প্রতিনিধি দল, ফাইল ছবি
এরই প্রেক্ষিতে তালেবানের নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ একটি ব্যাপকভিত্তিক সরকার গঠনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, সাবেক আফগান সরকারগুলোর কোনো কর্মকর্তাকে সম্ভাব্য অংশগ্রহণমূলক সরকারে স্থান দেয়া হবে না।
তিনি পরিষ্কার ভাষায় বলেন, তালেবান সরকারকে অংশগ্রহণমূলক করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজ যে দাবি তুলেছে তার অর্থ যদি এই হয়, গত ২০ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তাদেরকে সরকারে নিতে হবে তাহলে আমরা বলব, আফগান জনগণ এই দাবি মেনে নেবে না।
গত বুধবার রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আফগানিস্তান বিষয়ক এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক থেকে আবারো আফগানিস্তানে একটি অংশগ্রহণমূলক ও ব্যাপকভিত্তিক সরকার গঠন করতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। জবিউল্লাহ মুজাহিদ মূলত নিরাপত্তা পরিষদের ওই আহ্বানের জবাবে এ কথা জানান।
২০০১ সালে কথিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনে আফগানিস্তানের তৎকালীন তালেবান সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে গত ২০ বছর মার্কিন সমর্থিত আফগান রাজনীতিবিদরাই দেশ চালিয়েছেন।
গত বছরের ১৫ আগস্ট তালেবান আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশটিতে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের দাবি ওঠে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার পক্ষ থেকে। তালেবান অবশ্য বলেছে, তাদের সরকারে আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। তবে এর মধ্যে সাবেক সরকারগুলোর কোনো প্রতিনিধিকে স্থান দেয়া হয়নি।