দীর্ঘদিন ধরে অনশনরত এক বন্দির সাথে প্রতারণা করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। অনশন ভাঙাতে ব্যর্থ হয়ে তাকে মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনশন ভাঙার পরে সেই প্রতিশ্রুতি বাতিল করে বন্দিত্বের মেয়াদ বাড়িয়েছে কারাগার কর্তৃপক্ষ। খবর মিডলইস্ট মনিটর।
খলিল আওয়াদেহ
খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর চার সন্তানের পিতা খলিল আওয়াদেহকে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে আটক করে। পরে কোনো বিচার ছাড়াই তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। ইসরায়েলি একটি নিয়মানুসারে সেখানকার কর্তৃপক্ষ ছয় মাসের জন্য কোনো চার্জ বা বিচার ছাড়াই যে কোনো ফিলিস্তিনিদের আটক করে রাখতে পারে।
৪০ বছর বয়সী খলিল মধ্য ইসরায়েলের রামলেহ কারাগারে বন্দি ছিলেন। মুক্তির দাবিতে তিনি ১১১ দিন ধরে অনশন করে আসছিলেন। দীর্ঘদিন অনশনের কারণে তার সারা শরীরে, বিশেষত তার নিম্নাঙ্গে ও পেশীগুলোতে তীব্র ব্যথার সৃষ্টি হয়। কারো সাথে কথা বলা, অন্যের সাথে যোগাযোগ করতেও অসুবিধায় ভুগতেন তিনি।
খলিল আওয়াদেহের মুক্তির দাবিতে স্বজনরা
গত সপ্তাহে রামলেহ কারাগারে খলিল রক্ত বমি করেন এবং তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। সাথে দুর্বল দৃষ্টিশক্তির বিষয়টি তো ছিলই। এ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে খলিল কারাগারে ফিরে আসেন। সব মিলিয়ে খলিলের স্বাস্থ্য খুবই খারাপ ছিল এবং তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গিয়েছিল।
অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ খলিল আওয়াদেহকে মুক্তি দেওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে কোনো তারিখ নির্ধারণ করেনি। এ অবস্থায় ১১১ দিন পরে খলিল অনশন ভঙ্গ করেন। পরবর্তীতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মুক্তি দেওয়ার মৌখিক চুক্তি বাতিল করে এবং বন্দিত্বের মেয়াদ আরও চার মাস তিন দিন বৃদ্ধি করে।
এ বিষয়ে ফিলিস্তিনি প্রিজনার সোসাইটি (পিপিএস) বলছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ খলিলকে মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও তা থেকে ফিরে আসে। খলিলের স্বাস্থ্য এখনও খুব খারাপ এবং তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পিপিএসের তথ্যানুসারে , ইসরায়েলি কারাগারে প্রায় ৪,৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক করে রাখা হয়েছে।