ভেনিজুয়েলায় সফরে আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দল। কিন্তু কারাকাস-ওয়াশিংটন আলোচনায় দেশটির বিরোধী দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এতে বিরোধী দলগুলোর সমন্বয়ক ওমর বারবোজা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমাদের আলোচনায় ডাকা হয়নি, আমরা এজেন্ডা মানি না। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
কারাকাস-ওয়াশিংটন আলোচনা: ক্ষিপ্ত মাদুরো বিরোধীরা
ওয়াশিংটন নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে স্বীকৃতি না দিলেও তেল-গ্যাস আমদানির আশায় সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মাদুরো দ্বিতীয় মেয়াদে পুনঃনির্বাচিত হন। বিরোধী দলগুলো সে নির্বাচন বয়কট করেছিল।
এ অজুহাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে ভেনিজুয়েলার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। শুধু তাই নয়, ওয়াশিংটন ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারিও করে। অথচ এই ঘটনার আগে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি তার প্রায় সব তেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে আসছিল।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ভেনিজুয়েলার সাথে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়ে হোয়াইট হাউস জানায়, আমেরিকা অঞ্চলের জ্বালানি সুরক্ষার ওপর বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করার মাত্র কয়েকদিন পরই ওয়াশিংটন মার্চ মাসে কারাকাসে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠায়। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপটি ছিল মিত্র মস্কো থেকে কারাকাসকে দূরে রাখার কৌশল। একইসাথে বৈশ্বিক জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রচেষ্টা।
মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার লক্ষ্যে ওয়াশিংটন এবং অন্যান্য কয়েক ডজন দেশ বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে স্বীকৃতি দেয় ও কারাকাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানির ৯৬ শতাংশই বাধার মুখে পড়ে। ভেনিজুয়েলার এই বিপদে এগিয়ে আসে রাশিয়া।
তবে যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকটে সুর নরম করে ওয়াশিংটন। ভেনিজুয়েলার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যুক্তরাষ্ট্র কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দেয়। এর ফলে মার্কিন তেল কোম্পানি শেভরনের সাথে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পায় ভেনিজুয়েলা।
এ সময় কারাকাস ভেনেজুয়েলায় আটক দুই আমেরিকানকেও মুক্তি দেয়, যা দুদেশের মধ্যে একটি ইতিবাচক সম্পর্কের সূচনা করে।