অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে খালেদার জিয়ার আহ্বান

জীবনভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দেশের প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‌‌‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করুন।’

সোমবার, ২৮ আগস্ট দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বেগম খালেদা জিয়া এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যে সহিংসতায় সে দেশের রোহিঙ্গাদের ওপর নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিবর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। রোহিঙ্গারা বসতভাটি, সহায় সম্বল হারিয়ে প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সীমান্তগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে। রাখাইন রাজ্যে গ্রামের পর গ্রামে আগুন জ্বলছে। প্রাণভয়ে রোহিঙ্গারা দিগ্বিদিক ছুটে বেড়াচ্ছে, গহীণ অরণ্যে ঢুকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছে। আশ্রয়হীন রোহিঙ্গাদের ওপরও মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী অবিরাম গুলিবর্ষণ করে যে নারকীয় পরিবেশ তৈরি করেছে তা বর্ণনাতীত।

বিবৃতিতে বেগম জিয়া বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে অমনোযোগী বাংলাদেশ সরকারের দুর্বল কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই পরিস্থিতি শোচনীয় রূপ ধারণ করেছে। আমি বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ, গুরুতর আহত রোহিঙ্গা যারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসতে সক্ষম হয়েছে তাদের অনেকেই হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এবং কারো কারো মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার এলাকায় রোহিঙ্গা পুরুষ-নারী-শিশুরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নাফ নদীর তীরে বসে ভয়ঙ্কর অনিশ্চয়তায় প্রহর গুনছে। এই দৃশ্য অমানবিক, বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক।’

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা সমাধানহীন একটি অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে নিপতিত থাকলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ক্রমাগতভাবে অবনতিশীল হতে থাকবে এবং এতে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে ঐতিহ্যগত স্থিতিশীলতায় বিরূপ প্রভাব ফেলবে। সুসম্পর্কের আবহমানধারা যাতে কোনভাবেই বিনষ্ট না হয়, সে বিষয়ে মিয়ানমার সরকারকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হয়ে রোহিঙ্গা সংকটের জরুরি অবসান ঘটাতে হবে। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে যেকোনো সংকট আরো ঘণীভূত হয়।’

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা গৃহহারা হয়েছে। বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে তাদেরকে আটকের পর মানবিক সহায়তা দিয়ে আবার তাদেরকে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি।