নির্বাচন কমিশনকে যেসব প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘ

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ৫টি প্রস্তাব করেছে জাতিসংঘ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এসব প্রস্তাব দেয় জাতিসংঘ। কমিশনের সর্বশেষ সভায় (মঙ্গলবার) এসব প্রস্তাব নিয়ে বিশদ আলোচনা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ইউএন ওমেনসহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা ও তহবিল ইউএনডিপির এ প্রকল্পে সহায়তা করবে। ২০১৮ সালের শুরু থেকে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি বা শেষ অবধি পর্যন্ত ওই প্রকল্প পর্যায়ভিত্তিক চলবে।

এর আগে নির্বাচন কমিশন থেকে কারিগরি সহায়তা চাওয়ার পর জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক বিভাগের (ডিপিএ) ইলেক্টোরাল অ্যাসিসট্যান্স ডিভিশনের (ইএডি) একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি দল বাংলাদেশ সফর করেছিল।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণ, কমিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তারা ফিরে গিয়ে জাতিসংঘে প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনের সুপারিশ জাতিসংঘ অনুমোদন করেছে।

সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পাঁচ প্রকারের কারিগরি সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব করেছে জাতিসংঘ। প্রস্তাবগুলো হলো-

১. ভোটার রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে সহায়তা: ভোটার তালিকা প্রণয়নে ইসির যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার লাইসেন্স ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতির প্রক্রিয়া উন্নয়নে সহায়তা দেয়া। যাতে ভোটার রেজিস্ট্রেশন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত বিষয়ে ইসির নিজস্ব শক্ত ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠে। আর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ফান্ড ছাড়াই এসব কার্যক্রমে সক্ষমতা অর্জনের দক্ষতা গড়ে তোলা।

২. জনসচেতনতা বাড়ানোর কৌশল: বিশেষ করে নারী ও যুবকদের মধ্যে ভোটার সংক্রান্ত শিক্ষা দেয়া ও আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করা।

৩. দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রশমন: দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রশমনের আওতায় সহিংসপ্রবণ জেলাগুলোতে সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক সম্প্রীতি ও সচেতনতা সৃষ্টি করার বিষয়ে কৌশল বিনিময়। পাশাপাশি নির্বাচনী সংঘাত বন্ধ এবং আইন-বিধি প্রতিপালনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করা। সহিংসতার খবর ইসি যাতে দ্রুত পেয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে সেই কৌশলগত সহযোগিতা করা।

৪. অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ব্যবস্থাপনা: জেন্ডার, জাতিগত ও সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় ইসির সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করা।

৫. প্রশিক্ষণ: নির্বাচন কর্মকর্তা এবং নির্বাচনের স্টেকহোল্ডারদের প্রশিক্ষণ দেয়া।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে ইসি শক্তিশালীকরণ একটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অনুদান দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল ইউএনডিপি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের পর পুনরায় সহায়তার ঘোষণা দিল জাতিসংঘ।