যেভাবে যাত্রীর পেট থেকে পাওয়া গেল স্বর্ণের বার...

রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দেশ-বিদেশের যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত। বাইরে আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়। কেউ প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরছে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য যেমন আছেন স্বজনরা তেমনই যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের বিদায় দিতে অশ্রুঝরানো মানুষজনও রয়েছেন।

এছাড়াও নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা এ বিমানবন্দরে পোশাকি ও সাদা পোশাকের নিরাপত্তাবাহিনীও সদা জাগ্রত। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টায় মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে এসেছেন এক যুবক। নাম মো. মিজান আহমেদ। কুমিল্লা সদর উপজেলায় তার বাড়ি। তার বাবার নাম আবদুল মান্নান। চোখে কালো দাগ ও হাঁটাচলায় অস্বাভাবিকতার কারণে তিনি নজরে পড়ে যান শুল্ক গোয়েন্দাবাহিনীর। তাকে দেখে তাদের সন্দেহ ঘনীভূত হয়।

কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে গ্রিন চ্যানেল পার হয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। মিজানকে বলা হয় তার পেটে কী আছে? মিজান স্বর্ণ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

কিন্তু গোয়েন্দারা নাছোরবান্দা। আগে থেকেই তাদের কাছে স্বর্ণ পাচারের তথ্য ছিল। তারা নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসাবাদের পর মিজানকে আর্চওয়ে মেশিনে হাঁটায়। তখনই তাঁর পেটের ভেতর স্বর্ণ থাকার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে। নিজে থেকে স্বর্ণ বের না করে দিলে তাকে এক পর্যায়ে উত্তরার জাহানারা ক্লিনিকে নিয়ে এক্স-রে করানো হয়।

এক্স-রে প্রতিবেদনে মিজানের তলপেটে স্বর্ণের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয় শুল্ক গোয়েন্দার দল। এরপর তাকে আবার বিমানবন্দর নিয়ে শরীর থেকে স্বর্ণ বের করার চেষ্টা চলতে থাকে। এরই অংশ হিসেবে তাকে কলা ও জুস খাওয়ানো হয়। অবশেষে শুল্ক গোয়েন্দাদের উপস্থিতিতে টয়লেটের অভ্যন্তরে বিশেষ কায়দায় তাঁর পায়ুপথ দিয়ে দুটি স্বর্ণের বার বের করে আনা হয়। পরে মিজানের হাতব্যাগ থেকে আরো চারটি স্বর্ণের রিং পাওয়া যায়।

তোপের মুখে বিধ্বস্ত মিজান জানান, আকাশে বিমানে অবস্থানের সময় তিনি দুটি স্বর্ণের বার টেপ দিয়ে মুড়ে পায়ুপথে প্রবেশ করান।

শুল্ক গোয়েন্দার পক্ষ থেকে জানানো হয়, আটক দুটি স্বর্ণবারের প্রতিটির ওজন ১০০ গ্রাম করে। এছাড়া চারটি রিংয়ের মোট ওজন ৫৮ গ্রাম। আটক স্বর্ণের মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। মিজানকে চোরাচালানের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

শুল্ক গোয়েন্দার ওয়েবসাইটে বলা হয়, শুল্ক গোয়েন্দার সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মিজানের ওপর নজর রেখেছিলেন।