উবার পাঠাও বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটে যাচ্ছে সিএনজি চালকরা

বর্তমান সময়ে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অ্যাপনির্ভর জনপ্রিয় পরিবহন সেবা উবার ও পাঠাও। ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অ্যাপভিত্তিক এই পরিবহন সেবা বন্ধ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশা অপসারণ করে নতুন অটোরিকশা প্রতিস্থাপনসহ ৮ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে দুইদিন ধর্মঘটসহ মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন দুলাল। ঘোষণা দেয়া হয়েছে, আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী এই ধর্মঘট পালন করা হবে।

জানা গেছে, কর্মসূচি অনুযায়ী অ্যাপভিত্তিক সেবা বন্ধের দাবিতে আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা ও চট্টগ্রামে ধর্মঘট পালন করবেন অটোরিকশা চালকরা। এরপর দাবি পূরণ না হলে নতুন বছরে ১৫ জানুয়ারি থেকে দুই মহানগরে লাগাতার ধর্মঘট পালিত হবে।

সাধারণ মানুষের অভিমত, দাম দরের ঝক্কি-ঝামেলা নেই বলেই অ্যাপভিত্তিক সেবা খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অন্যদিকে রাজধানীতে অধিকাংশ সিএনজি মিটারে চলতে চায় না। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং প্রয়োজনের সময় তারা কাঙ্ক্ষিত জায়গায় যেতে চায় না।

কমিটির সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন দুলাল শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, 'আগামী রোববার ১৯ নভেম্বর আট দফা দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২২ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ হবে। একই দিন বিক্ষোভ শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এরপর ৩০ নভেম্বর বন্দর নগরীতে শ্রমিক সমাবেশ এবং ১০ ডিসেম্বর বিআরটিএ ঘেরাও করা হবে।'

সাখাওয়াত হোসেন দুলাল বলেন, 'ঢাকা ও চট্টগ্রামে এক যুগের বেশি সময় ধরে চলা অটোরিকশার ইঞ্জিন ও চেসিস পুরানো হয়ে অকার্যকর হয়ে আছে। চেসিস ও ইঞ্জিন বদলানো না গেলে দুর্ঘটনা ঘটে যাত্রী ও চালকের প্রাণহানি ঘটতে পারে।' এর আগে মালিক সমিতির অসাধু নেতারা অটোরিকশার মালিকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আট দফার মধ্যে যা রয়েছে-

১. দুই মহানগরীতে চলাচল করা মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশা অপসারণ করে নতুন অটোরিকশা প্রতিস্থাপন করতে হবে। ২. ঢাকায় চালকদের জন্য পাঁচ হাজার এবং চট্টগ্রামে চার হাজার অটোরিকশা বিতরণ করতে হবে। ৩. অতিদ্রুত উবার, পাঠাওয়ের মতো অ্যাপনির্ভর পরিবহন সেবা বন্ধ করতে হবে। ৪. খসড়া পরিবহন আইন থেকে শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত ধারা বাতিল করতে হবে। ৫. চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে ব্যবহারিক পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে। ৬. পার্কিংয়ের জন্য মামলা করা যাবে না। ৭. অযথা চালকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং ৮. নিবন্ধিত অটোরিকশা চালকদের ঢাকা জেলার সব জায়গায় চলাচলের অনুমতি দিতে হবে।