প্রধানমন্ত্রী: সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে

সরকারি চাকরিতে শতকরা ৫৬ ভাগ কোটার বিরোধীতা করে দীর্ঘ দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন চাকরি প্রার্থীরা। নতুন করে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ও গত ৪ মার্চ বড় ধরনের বিক্ষোভ দেখিয়েছে হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার যুবক। শুধুমাত্র রাজধানীর শাহবাগ মোড়েই নয় একযোগে আন্দোলন হচ্ছে সারা দেশে। অন্যদিকে কোটা পদ্ধতি পক্ষেও কথা বলছে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বেশকিছু সংগঠন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, শতকরা অর্ধেকেরও বেশি কোটায় নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম চালু রাখার মধ্য দিয়ে মূলত মেধাকে অবদমিত করে রাখা হয়েছে। এই অবস্থাকে বৈষম্যমূলক হিসেবে চিহ্নিত করে অনেকেই বলছেন, এর ফলে প্রকৃত মেধাবীরা তুলনামূলক কম মেধাবীদের কাছে মার খেয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কোটা সংস্কার বিরোধীরাও নানা যুক্তি দেখাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে কোটার পক্ষে-বিপক্ষে সকলেই তাকিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা আছে, তা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার চট্টগ্রামের পটিয়ায় পটিয়া মডেল হাইস্কুল মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে বলে মত দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কারণেই অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। কাজেই তাদের সম্মান দিতেই হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে, মেয়ে, নাতি, পুতিরা যেন চাকরি পায়, সে জন্যই কোটার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শূন্যপদ কোটা থেকে পূরণ না হলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থী মেধাবীদের নিয়োগ দিতে কোটার বিষয়টি শিথিল করা হয়েছে। আমাদের বুঝতে হবে, মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন না করলে আজ আমরা কেউ চাকরি পেতাম না।’

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রয়েছে। এছাড়াও পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর জন্য ১০ শতাংশ, নারীর জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ কোটা বিদ্যমান রয়েছে। সবমিলিয়ে কোটা ৫৬ শতাংশ। তবে আন্দোলনকারীরা চান কোটা কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। এর প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী আজ এসব কথা বলেন।