ঢাকা মেডিকেলের মর্গে ‘ইঁদুরে’ খেল শিশুর লাশ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একের পর এক হতাশ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। এবার হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের মর্গের ফ্রিজে রাখা শিশুর মরদেহের মুখের মাংস খুবলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কেউ কেউ ধারণা করছেন, হয়তো ইঁদুরে এই কাজ করেছে। এদিকে ফ্রিজের নিম্ন তাপমাত্রায় ইঁদুরের সেখানে যাওয়ার কথা না।

বৃহস্পতিবার বিকালে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এই স্পর্শকাতর ঘটনাটি ফাঁস হয়। এরপর অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছে। এদিকে আহত শিশু সোহানের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

গত ২৫ এপ্রিল শরীরের গরম ডাল পরে পুড়ে যায় চার বছরের সোহান হাওলাদার। মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় শিশুটি। এরপর শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়। এরপরই মারাত্মক আহত হয় শিশুটির মরদেহ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটিকে বাম চোয়ালের কিছু মাংস খুবলে নেয়া অবস্থায় দেখা যায়। প্রথমে বিষয়টি লক্ষ্য করেন গুলশান থানার উপপরিদর্শক ফারুক আলম। শিশুটির লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার সময় তিনি দেখতে পান শিশুটির বাম চোয়ালটি রক্তাক্ত।

এরপর ঘটনাস্থলের অনেকেই ধারণা করেন শিশুটির লাশটিকে ইঁদুর কেটেছে। ফ্রিজের ভেতর ইঁদুরের আগমন নিয়ে নানারকম কথা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে, হাসপাতালটির পরিচালক এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, তদন্ত করা হচ্ছে ফ্রিজের মধ্যে কীভাবে ইঁদুর ঢুকে লাশকে আহত করলো। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের একজন বলেন, ‘ফ্রিজটি বেশ পুরনো আর ভাঙ্গা। এখানে বড় বড় ইঁদুরের আনাগোনা রোজকার ঘটনা।’

রাজধানীর গুলশান থানার নর্দার একটি বাসায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত শিশু সোহান। হাওলাদারের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানাস্থ কনকদিয়া গ্রামে। শিশুটির বাবা সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘আমার ছেলেটা এমনিতেই আগুনে পুড়ে বেশ যন্ত্রণা নিয়ে মারা গেছে। তারপর তার মরেও যেন শান্তি নেই। তার মরদেহ খেল ইঁদুরে। বেশ কষ্ট নিয়ে বাপধন আমার পৃথিবী ছাড়লো।’