‘যেনো বিচার বহির্ভূত মানুষ হত্যার হিড়িক চলছে’

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি বলেছে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বর্তমানে দেশে যেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যার নামে কিলিং প্র্যাকটিস করছে।

রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, ‘সারাদেশে বন্দুকযুদ্ধের নামে মারণযজ্ঞ চলছে। গত তিন দিনে চার জেলায় বিচারবহির্ভূত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে সাতজন। এই মাসে যেনো পোকামাকড়ের মতো বিচার বহির্ভূত মানুষ হত্যার হিড়িক চলছে। ’

বিএনপি নেতা বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বারবার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ জানালেও তাতে সরকারের টনক নড়ছে না।

রিজভী বলেন, ‘সরকারের বিচারবহির্ভূত হত্যার মূল উদ্দেশ্য দেশকে স্থায়ী দু:শাসনের বজ্র আঁটুনিতে বেঁধে ফেলা, আর সেজন্য জনগণকে আতংকিত করে রাখা। তারা যেন ভোগ-লালসায় অস্থির থাকা এই অবৈধ সরকারের আগামী একতরফা নির্বাচনের নীল নকশার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহসী না হয়। আর এজন্য সরকার বিনা বিচারে হত্যার দণ্ডাজ্ঞা ধরিয়ে দিয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে। ’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে বন্দুক যুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ হত্যা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে এই সরকারের আমলে সংঘটিত সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার তদন্ত দাবি করছি।’

ঈদের আগেই মহাসড়ক সংস্কার বিষয়ে সেতুমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘ঈদের আগে ক্ষমতাসীন লোকজনের পকেট ভারী করতেই সরকার এই সংস্কার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যারা সারা বছর মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে রাখে তারা কোন আরব্য রজনীর দৈত্যকে দিয়ে ঈদের কয়েকদিন আগে সব রাস্তাঘাট মেরামত করে ফেলবেন সেটি কারো উপলব্ধিতে আসে না। এটি মন্ত্রীর বাকোয়াস ছাড়া কিছুই নয়।’

লোডশেডিং বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই পবিত্র মাহে রমজানেও দেশজুড়ে লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি চলছে গ্যাস ও পানির তীব্র সঙ্কট। গ্যাস সঙ্কটে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মানুষের চুলা জ্বলছে না, ফলে সেহেরি ও ইফতারি তৈরি করতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে পানি সঙ্কট। আর এ কারণে মানুষ রান্নাবান্না থেকে শুরু করে ওযু কিংবা গোসলের পানিও পাচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকায় পানির জন্য হাহাকার চলছে, হাঁড়ি পাতিল নিয়ে মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। গ্রামে গ্রামে চলছে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়। সেখানে এখন বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মধ্যে আসে। এমনকি ইফতার, সেহেরি ও তারাবির নামাজের সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার সরকারি ঘোষণা জনগণের সাথে খাঁটি প্রহসন।’ ইউএনবি।