পর্ব দুই: কানাডায় স্টুডেন্ট হিসেবে আসতে চান?
- Details
- by এম আর জিহাদ
স্টুডেন্ট ভিসায় যারা কানাডায় পড়াশুনা করতে আসতে চান, তাদের মনে প্রায়ই কিছু প্রশ্ন উঁকি দেয়। তারমধ্যে একটি হচ্ছে - প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করে পাশ করা কতটা সহজ? আর যদি কেউ পাশ না করতে পারে তবে কী ভিসা রিনিউ হবে?
সত্যিটা হলো, এখানে যারা নিজ খরচে পড়তে আসেন, তাদের অনেকেই এটা ভেবেই নেন যে, কানাডায় অর্থ এবং সময় ব্যয় করা তাদের একধরণের ইনভেস্টমেন্ট। যেন তারা ভবিষ্যতে কানাডায় স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
সপ্তাহে ২০ ঘন্টা চাকরি করে ভালোভাবে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়াটা কোন কঠিন কাজ নয়। পাশ করতে না পারলে রি-টেক এর সুযোগ থাকে। কিন্তু কোন সেমিস্টার চালিয়ে যেতে না পারলে বা ড্রপ করলে কলেজ থেকে ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যেতে পারে। তবে সেমিস্টার ফি ঠিক মতো পরিশোধ করলে ছাত্রত্ব টিকে থাকে।
কানাডায় কোন স্টুডেন্ট চাইলেই ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারেন না, যদি না ঐ ছাত্রের ক্লাশ শিডিউল, মডুল এর সাথে চাকরির সময় না মিলে। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ক্যামলুপস-এ সাধারনত প্রতি ঘন্টায় ১১.৫৭ ডলার করে বেতন দেওয়া হয়। অনেকে বেশিও পায়। আর Thompson Rivers University এর অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় যে, কোন ছাত্র বাংলাদেশ থেকে IELTS না দিয়ে আসলে বা IELTS-এ স্কোর কম থাকলে তাকে EpT (Experiment Test) পরীক্ষা দিতে হবে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই ছাত্রকে সর্বোচ্চ সময়সীমায় EASL (English as a Second Language) ইংলিশ কোর্সটিতে ভর্তি করে দেবে। কোন ছাত্রের কোর্সের মেয়াদ ৪ বছর অথবা ২ বছর যাই থাকুক না কেন, ঐ ছাত্রকে ইংলিশ কোর্সটি সম্পন্ন করার আগে তার নিজ প্রোগ্রামের কোন কোর্সে রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে তাকে ইংলিশ কোর্সটি চলাকালীন সেমিস্টার এর টাকা পরিশোধ করে যেতে হবে।
আর টিউশন ফি নিয়ে যে কথা, কোন ছাত্র সপ্তাহে যদি ২০ ঘন্টা কাজ করে, তাহলে সেটা তার থাকা, খাওয়া ও বাসা ভাড়া ইত্যাদিতেই শেষ হয়ে যাবে। আর ২০ ঘন্টা কাজ করে কোন ছাত্র রেজাল্ট ভাল করতে কতটা সক্ষম সেটা আসার আগে নিজ দেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ভাবতে হবে।
উল্লেখ্য যে, কাজ করে টিউশন ফি পরিশোধ করা সম্ভব না। তবে অনেকেই গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টারটি বাধ্যতামূলক না হওয়ায় এ সেমিস্টারের ৪ মাস পুরো সময় কাজ করে সর্বোচ্চ একটা সেমিস্টার এর টাকা জমিয়ে থাকে। এ সেমিস্টার ছাড়া অন্যান্য সেমিস্টার বাধ্যতামূলক। এগুলোর কোন একটি না করলে বা একাধিক ড্রপ হলে স্টাডি পারমিট বাতিল হতে পারে।
আরও একটি প্রশ্ন ছাত্রদের মাথায় ঘুরে। সেটি হলো, সেমিস্টার ড্রপ হয়ে গেলে ভিসা এক্সেনশন করা কি সম্ভব?
একজন ফুলটাইম ছাত্রকে তার ছাত্রত্ব বজায় রাখতে হলে বছরে কমপক্ষে দুটি সেমিস্টার পড়াশুনা করে এবং টিউশন ফি জমাদানপূর্বক কমপ্লিট করতেই হবে। সামার সেমিস্টারটা পড়াশুনা না করে কোন একজন স্টুডেন্ট সামারে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারেন। কোন কারণে কোন সেমিস্টার ড্রপ হলে কলেজ কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই পরপর দুইটা সেমিস্টার ড্রপ করা যাবেনা।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দুইবছরের কোন কোর্সে কানাডায় আসা একজন ছাত্র কলেজের টিউশন ফি ঠিকমতো পরিশোধ করে যথাসময়ে পড়াশুনা শেষ করতে পারেন। কিন্তু কোন সঙ্গত কারণে ঐ দুইবছরে কোন সেমিস্টার ড্রপ হলে সেক্ষেত্রে দুই বছরের কোর্সটি দীর্ঘায়িত হয়। সেক্ষেত্রে ভিসা এক্সেনশন করিয়ে নেয়া যাবে। উক্ত ছাত্রের মূল কোর্স যথাযথভাবে শেষ হবার পরেই তিনি তার কলেজ থেকে ইস্যুকৃত ছাড়পত্র দিয়ে ওয়ার্ক পারমিটের জন্যে আবেদন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য যে-
১) এক বছরের কোর্সে পড়তে আসা কোন ছাত্র কোর্সটি যথাযথভাবে শেষ করার পর এক বছরের ওয়ার্কপারমিট পাবেন।
২) দুই বা তিন বছরের কোর্সে পড়তে আসা কোন ছাত্র কোর্সটি যথাযথভাবে শেষ করার পর তিন বছরের ওয়ার্কপারমিট পাবেন।
৩) চার বছরের কোর্সে পড়তে আসা কোন ছাত্র কোর্সটি যথাযথভাবে শেষ করার পর চার বছরের ওয়ার্কপারমিট পাবেন।
বর্তমানে যে বিষয়টি লক্ষণীয়, ওন্টারিও প্রভিন্স থেকে কোন ছাত্র পাশ করে বের হলে তাকে পারমানেন্ট রেসিডেন্সির জন্যে নিজ ফিল্ডে জব পেতে হবে। অনেক স্টুডেন্ট ওন্টারিও প্রভিন্স থেকে পড়াশুনা করে অন্য প্রভিন্সে (যেমন অ্যালবার্টা, সাসকাচুয়ান ইত্যাদি) মুভ করেন যেখানে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি অ্যাপ্লিকেশনের জন্যে নিজ ফিল্ডের জব না দেখালেও চলে।
লেখক: এম আর জিহাদ, সেচ্ছাসেবক, ইমিগ্রেশন ও সেটেলমেন্ট।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর